Web
Analytics
ইউটিউব থেকে আয় করার গাইডলাইন। - Uddoktagiri Blog
অর্জন হোক দক্ষতা
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমানতালে অর্জন হোক দক্ষতাও।
September 29, 2018
effective content
কনটেন্ট এবং ইফেকটিভ কনটেন্ট মার্কেটিং!
October 2, 2018

ইউটিউব থেকে আয় করার গাইডলাইন।

Share this Post on

একটা সময় আমরা জানতাম ইউটিউব এ শুধু ভিডিও দেখা যায়। কিন্তু এখন আমরা প্রায় সবাইই জানি ইউটিউব এ ভিডিও দেখার পাশাপাশি চাইলে ইনকামও করা যায়। আজকে শুধু একটা বেসিক আইডিয়া দিয়ে দিব, কি কি উপায়ে ইউটিউব থেকে আয় করা যায় তার উপর। চলুন শুরু করা যাক।

 

কি কি উপায়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়? ইউটিউব থেকে বেশ কয়েক উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়। তার মধ্যে জনপ্রিয় এবং সহজ উপায়গুলো নিয়ে আজ কথা বলব।

 

১. ইউটিউব পার্টনার হয়ে

ইউটিউব এর পার্টনার হওয়া মানে আপনি ইউটিউব এর হয়ে কাজ করবেন। সে জন্য আপনাকে এপ্লাই করতে হবে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এপ্লিকেশন করে। তাই আপনার এপ্লিকেশন সাথে সাথেই এপ্রুভ হয়ে যাবে এমনটা ভাবা যাবেনা। আপনার চ্যানেল এ কোয়ালিটি ভিডিও থাকতে হবে এবং পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকতে হবে। আর কোয়ালিটি ভিডিও বলতে ১০০% নিজের তৈরী করা ভিডিও, কারো থেকে কপি করা বা চুরি করা ভিডিও না। তারপর আপনার এপ্লিকেশন এপ্রুভ করলে ওরা আপনার চ্যানেল এর মাধ্যমে ইনকাম করবে এবং ওরা আপনাকে মাসিক টাকা দিতে থাকবে।

 

২. গুগল এডসেন্স এর এড শো করে

আমরা ভিডিও দেখার সময় ভিডিওর নিচে এবং সাইডে ২ রকম এড শো করে। এগুলোই এডসেন্স এর ব্যানার এড। আবার ভিডিওর মাঝখানে ৫/১০ সেকেন্ড এর এড দেয় এটাও এডসেন্স এর ভিডিও এড। তো আপনার চ্যানেল এ এ রকম বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে চাইলে আপনার চ্যানেল সাজানোর পর এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করতে হবে। ইউটিউব এডসেন্স এপ্রুভ করতে খুব বেশি সময় নেয় না। সর্বোচ্চ এক দিনের মধ্যেই আপনার একাউন্ট এপ্রুভ করবে। তারপর এড শো করানোর জন্য মনিটাইজেশন অন করতে হবে। মনিটাইজেশন অন করার জন্য আপনার চ্যানেল এর মোট ভিউ ১০,০০০ এর বেশি হতে হবে। তাহলেই আপনার ভিডিওতে এডসেন্স এর এড শো করবে। ত আপনি এডসেন্স থেকে আয় করার জন্য অবশ্যই ভাল মানের ভিডিও দিতে হবে এবং ভিডিওতে ভিউ হতে হবে। বিস্তারিত আলোচনা করে আরেকটি পোস্ট লিখব।

 

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে

আপনি চাইলে ইউটিউব পার্টনার না হয়ে অথবা আপনার ভিডিওতে এড শো না করে অথবা এড শো করার পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও ইনকাম করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে কমিশন এর বিনিময়ে কারো প্রোডাক্ট সেল করে দেয়া। যেমন ক্লিকব্যাংক অথবা এমাজন এর প্রোডাক্ট সেল করে সেখান থেকে আপনি কমিশন নিয়ে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন সিপিএ মার্কেটপ্লেস এর অফার প্রমোট করেও ইনকাম করতে পারবেন।

 

৪. স্পন্সরশিপ করে

আপনার চ্যানেল অথবা ভিডিও যদি পপুলার হয় অর্থাৎ ভিডিওতে যদি অনেক ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানীর কাছ থেকে স্পন্সরশীপ নিয়ে তাদের প্রোডাক্ট এর প্রচারণা করে দিয়ে সেখান থেকেও আয় করতে পারবেন।

 

৫. প্রোডাক্ট সেল করে

আপনার যদি নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলে ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের পাশাপাশি ইউটিউবেও আপনার প্রোডাক্ট এর প্রমোশন করে প্রোডাক্ট সেল করে আয় করতে পারেন।

 

৬. সার্ভিস / ফ্রীলান্স ওয়ার্ক সেল করে

আপনি যদি ফ্রীলান্সার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার সার্ভিস যেমন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ওয়েব ডিজাইনিং, ইমেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এগুলোর ব্যাপারে ডিটেইলস ভিডিও দিয়ে আপনার সার্ভিস সেল করতে পারেন।

 

৭. সাবস্ক্রীপশন / মেম্বারশীপ সেল করে

আপনি যদি এমন কিছু জানেন অথবা এমন কিছু ভিডিও/টিউটোরিয়াল যদি আপনার কাছে থাকে যেগুলো মানুষ টাকা দিয়ে হলেও দেখতে চাইবে তাহলে আপনি প্রিমিয়াম সার্ভিস চালু করতে পারেন। কিছু ফ্রি ভিডিও দিয়ে মানুষকে আপনার ভিডিও সম্পর্কে আইডিয়া দিবেন তারপর আপনার প্রিমিয়াম সার্ভিসটি নিতে বলবেন।

 

৮. ডেস্ক্রীপশন এ লিংক সেল করে

আপনার ভিডিওতে যদি অনেক বেশি ভিউ থাকে তাহলে আপনার ভিডিওর ডেসক্রিপশন এ বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট এর লিংক সেল করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। আপনার কাজ হবে এসইও করে ভিডিওগুলো র‍্যাংক করানো এবং তাতে প্রচুর ভিউ আনা। তারপর লিংক সেল করবেন।

 

ইউটিউব চ্যানেল থেকে ইনকাম করার জন্য কি করতে হবে?

প্রথমেই আপনার ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য ইউটিউব এর নীতিমালা জেনে নিতে হবে। সেগুলো জেনে একটি চ্যানেল খুলতে হবে। চ্যানেলটি এমনভাবে কাস্টমাইজ করতে হবে যেন ভিউয়ারস রা দেখে প্রফেশনাল মনে করে। এরপর ভিডিও দিতে হবে। এখন কথা হচ্ছে কি ধরণের ভিডিও দিবেন? ইউটিউব সবসময় কোয়ালিটিকে প্রাধান্য দেয়। তাই আপনার কোয়ালিটিফুল ভিডিও বানাতে হবে যাতে দর্শকরা দেখে ভাল লাগে এবং ইউটিউব এর কাছেও ভাল মনে হয়। ভুলেও অন্য কারো ভিডিও কপি করে অথবা চুরি করে আপনার চ্যানেল এ আপলোড দিবেন না। তাহলে ইউটিউব আপনার চ্যানেল ব্যান করে দিবে। আর আপনি যে জিনিসটা ভাল পারেন সেটা নিয়ে ভিডিও বানাবেন। শুধু শুধু উল্টাপাল্টা যা তা ভিডিও দিলেই ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে পারবেন না। ভিডিও দেয়ার পর ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হবে। সে জন্য আপনাকে ভিডিও এসইও করতে হবে। যখন আপনার চ্যানেল অথবা ভিডিও তে ভিউ আসা শুরু হবে তখন থেকেই আপনার আয় শুরু হবে।

 

যা যা লাগবেঃ

ভালো ভিডিও ক্যামেরা

প্রথমেই আসবে একটি ভালো ভিডিও ক্যামেরা। মোবাইলের ক্যামেরা দিয়েও ভিডিও করতে পারেন। প্রাথমিক অবস্থায় মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা ভালো। ভিডিও টপিক সিলেক্ট করে নিন।

 

ধরুন আপনি একটি মোবাইল ফোনের রিভিউ দিবেন। মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে আনায়াসে ভিডিও করতে পারেন।

 

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

ভালো ভিডিও বানাতে হলে ভালো সফটওয়্যার আবশ্যক। যদি আপনি শিক্ষণীয় কোন ভিডিও বানাতে চান এবং লাইভ দেখাবেন কিভাবে করতে হয় তবে আপনার একটি ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার দরকার। এমন একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার হলো কেমটেসিয়া। ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে কেমটসিয়ার কোন বিকল্প নেই।

 

কেমটেসিয়া লেটেস্ট ভার্শন ৯.০ ডাউনলোড করে নিন। ডাউনলোড করার পর আপনি ৩০ দিনের ট্রায়াল ভার্শন পাবেন।

 

কেমটেসিয়া দিয়ে ভিডিও বানালে আপনি শেয়ার করার সময় সিরিয়াল কি চাবে। অনলাইনে অনেক সিরিয়াল কি পাবেন কিন্তু তা কাজ করানো কষ্টকর। ক্র্যাক ভার্শন দিয়ে কাজ করাটাও বিপদজনক। যেকোন মুহূর্তে ক্রেশ করতে পারে। সবচেয়ে সহজ উপায় হলো রেজিস্ট্রেশন ইনফো তে গিয়ে চেঞ্জ করে দেয়া।

 

ইউটিউব চ্যানেল তৈরী

ইউটিউব চ্যানেল তৈরী করা এবং ইউটিউব থেকে আয় করা খুব কঠিন কিছু নয়। আপনার একটি Gmail আইডি থাকলেই আপনি চ্যানেল খুলে নিতে পারবেন।

 

এই চ্যানেল থেকেই শুরু হবে আপনার ইউটিউব থেকে আয়।

 

চ্যানেল খুলে ফেলা হয়ে গেলে সেটিংস থেকে কিছু জিনিস জেনে নিতে হবে। প্রথমেই ‘view additional features’ থেকে দেখে নিবেন আপনি Youtube Partner এর জন্যে ‘monetization’ করা আছে কিনা।

 

 

প্রথমে আপনি উপরের ছবির মত দেখবেন আপনি Ineligible. এইবার বা দিকের সাইডবার (Channel) থেকে Advance এ ক্লিক করুন।

 

 

Advance এ কিল্ক করার পর নিচের ছবির মত দেখতে পাবেন। ড্রপ ডাউন থেকে বাংলাদেশ না দিয়ে ‘United States’ সিলেক্ট করুন। নিচে গিয়ে সেভ বাটন চাপুন এবং পুনরায় ‘Status and features’ এ প্রবেশ করুন।

 

 

‘Status and features’ এ প্রবেশ করলে নিচের ছবির মত দেখতে পাবেন। এইবার ‘Enable’ বাটন চাপুন এবং আপনার মোনেটাইজেশান পূরণ করুন।

 

আপনার গুগল এডসেন্স এ যদি পূর্বে কোন এপ্রুভ করা একাউন্ট থাকে তবে তা আপনার ইউটিউব এর সাথে এড করে নিতে পারেন। আপনার পূর্বের একাউন্ট থাকুক কি না থাকুক আপনার ইউটিউব একাউন্টের ভিডিও টোটাল ৪,০০০ মিনিট ভিউ হলে  এবং আপনার সাবস্ক্রাইবার ১০০০ হলে আপনাকে এপ্রুভাল দিবে।

 

চ্যানেল হয়ে গেলে, ভিডিও এডিট সফটওয়্যার হয়ে গেলে এখন শুধু ভিডিও বানানোর অপেক্ষা। ভালো ভিডিও বানাতে হলে আগে ভালো ভিডিও দেখুন। ইউটিউব এ রেগুলার ভালো ভিডিও দেখুন এবং আইডিয়া নিন।

 

কিছু দরকারি পরামর্শ

  • অন্যের ভিডিও কপি করবেন না।
  • অন্যের ভিডিও কপি করে এডিটিং করে নিজের লোগো ব্যবহার করবেন না। এটা ইউটিউব এর শর্ত লংঘন করে।
  • ভিডিও আপলোড এর সময় টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন ভালোভাবে প্রয়োগ করবেন। ট্যাগ উল্লেখ করবেন আপনার ভিডিওর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন।
  • সাব টাইটেল দেয়াটা ভালো। ইউটিউব সাব টাইটেল দেয়া ভিডিও বেশি গুরুত্ব দেয়।
  • ভিডিও পাবলিশ করার সময় যে কতগুলো সোশ্যাল শেয়ারের অপশন দেয় সবগুলো ব্যবহার করবেন। যেমন টুইটার, রেডিট, টাম্বলার ইত্যাদি।
  • আপনার ভিডিও ভালো হলে সাবস্ক্রাইবার বাড়বে। সাবস্ক্রাইবার দের একটি লিস্ট করুন। নিয়মিত তাদের ইমেইল করুন আপনার নতুন ভিডিও সম্পর্কে।
  • ১০,০০০ ভিউ হলে গুগল আপনার সাথে সযোগাযোগ করবে এডসেন্স এর এড এর ব্যাপারে। যদি না করে তাহলে আপনি যোগাযোগ করুন।
  • ইউটিউব এড কোড দিলে তা আপনার ভিডিওতে যোগ করে নিতে হবে।
  • আপনার কোন ওয়েবসাইট থাকলে তার লিংক আপনি আপনার ইউটিউব এর ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন।
  • কখনোই এডাল্ট কোন ভিডিও প্রকাশ করবেন না। হ্যাকিং সম্পর্কিত কিছু প্রকাশ করবেন না। ইউটিউব থেকে আয় বন্ধ হয়ে যাবে।
  • এডাল্ট বা হ্যাকিং সংক্রান্ত ভিডিও হলে ইউটিউব আপনার চ্যানেলে এড বন্ধ করে দিবে।
  • ইউটিউব বেসিক এসইও করে নিন।
  • সোশ্যাল শেয়ার করে আপনার ভিডিও প্রাথমিক ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছালেও অরগানিক সার্চ ছাড়া আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন না। এটা মাথায় রাখতে হবে।
  • সার্চ ইঞ্জিন ফ্যাক্টর গুলো মাথায় রাখতে হবে। সেই ভাবেই আপনার ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ করতে হবে।

Share this Post on