আপনি কি একজন উদ্যোক্তা হতে চান? উদ্যোক্তা হওয়া কিন্তু এত সহজ কাজ না,আবার অনেক সহজ । একজন উদ্যোক্তার মধ্যে যে গুনাবলী থাকে সাধারণ মানুষদের মধ্যে তা সাধারণত থাকে না। অনুশাসন, চেষ্টা, কঠোর প্ররিশ্রমের মনোভাব এই ধরণের আরো অনেক গুণে গুণান্বিত হয়ে থাকেন একজন বাণিজ্যের নাবিক।
প্রত্যেক ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তার যার যার দিক থেকে ভিন্ন এটা কিন্তু সত্য। কিন্তু কিছু কিছু অভ্যেশ আছে যা আপনি সকল সফল উদ্যোক্তাদের মধ্যে পাবেন। নিচে এমনি কিছু অভ্যেশের কথা তুলে ধরা হল –
লক্ষ্য স্থির করা
জীবনের সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে লক্ষ্য স্থির করা। আপনি যখন কোনো কাজ মন প্রাণ দিয়ে করতে চাইবেন দেখবেন নানা ভাবে নানা সমস্যা মাথাচারা দিয়ে উঠছে। আপনার হয়ে যাওয়া কাজটাও শেষ মূহূর্তে আর করা হয়ে উঠছে না। এই পর্যায়ে বেশিরভাগ নতুন উদ্যোক্তাদের মনে এটাই আসে যে আমাকে দিয়ে আর হবে না। আমি এই কাজটি শেষ করতে পারবো না। এটি আপনার মনোবল ভেঙ্গে দেয় যার ফলশ্রুতিতে আপনি আপনার লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তাই সবার আগে লক্ষ্য স্থির করুন।
নেটওয়ার্ক তৈরি
একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি অনেক কিছুই জানেন না। সেই দিক থেকে নতুন কিছু করতে গেলে আপনাকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হবে। তাই যত পারুন আপনার আশেপাশের মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন। এটি আপনাকে নানা তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে। সেই সাথে আপনার জন্য এই যোগাযোগ আপনার জন্য কাজ করবে নেটওয়ার্ক হিসেবে।
এ্যাডভারটাইজিং
আপনি আপনার কাজকে যত সুন্দর করে মানুষের মাঝে তুলে ধরবেন তার কদর বা গ্রহনযোগ্যতা ততো বাড়বে। আর সেই ক্ষেত্রে মোবাইল এ্যাডভারটাইজিং হতে পারে আপনার প্রথম পদক্ষেপ। সেজন্য আপনার আশেপাশের বন্ধু কিংবা আত্নীয়দের নির্বাচন করুন। এরপর তাদের আপনার কাজ মেইল কিংবা নানাভাবে প্রদর্শন করুন। যখন দেখবেন সাড়া পাচ্ছেন, তখন বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন।
উদ্ভাবন থেকে বিরত না থাকা
মনে রাখুন আপনি একজন উদ্যোক্তা। আপনার কাজই হচ্ছে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করা। নতুনকে সবার মাঝে তুলে ধরা। পিছনে হাজার মানুষ হাজারটা কথা বলবেই। তাকে নিয়ে বসে থাকলে আপনি কখনো সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন না। তাই সব সময় নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন আপনি পারবেন 🙂
পূর্ব পরিকল্পনা করা
সফল উদ্যোক্তারা তাদের দিনের কাজ আগেই পরিকল্পনা করে নেন। কিভাবে তারা তাদের পরবর্তী সকালের নানান ঝামেলা, কাজ সাড়বেন তা তারা আগের দিনই ভেবে রাখেন। সময় মূলত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সফল উদ্যক্তাদের জীবনে। একজন উদ্যোক্তাকে সফল হতে হলে অবশ্যই তাকে সময়ানুবর্তিতা অনুশীলন করতে হবে।
স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া
সুস্থ্য থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরূরী একজন মানুষের জন্য,এটা শুধু একজন উদ্যোক্তার জন্যই নয়,আমাদের সকলের জন্য সত্য। আপনি তখনি সকল কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন যখন আপনি নিজে সুস্থ থাকবেন। তাই আপনার নিজের কাজের জন্যই নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে এবং সর্বদা সচেতন থাকতে হবে যেন কোনো অসুস্থ হয়ে না পরেন।
ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং
একজন সফল উদ্যোক্তার মাথায় সবসময় থাকে কিভাবে তিনি তার বাণিজ্যিক দ্রব্য দিয়ে ক্রেতাকে সর্বোচ্চ সেবাটি দিতে পারেন। এতে করেই আসে সেই বহু প্রতীক্ষিত সফলতা। সকল সফল উদ্যোক্তাদের মধ্যে এই মিলটি দেখবেন। তারা ক্রেতাকে ভাবেন ঈশ্বরসম। সেবা গ্রহণকারী খুশী না থাকলে বাণিজ্যের উন্নতি হবে না কখনই এটা তাঁরা ভালোই বোঝেন।
লক্ষ স্থির রাখা
সফল উদ্যোক্তাদের মাথায় পরিস্কার থাকে তাদের লক্ষ্য। কোথায় তারা যেতে চান, কিভাবে যেতে চান থাকে তার পূর্ণ পরিকল্পনা। নিজের লক্ষ্য স্থির করতে পারলে আর পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারলে তারা সফল উদ্যোক্তা হতে পারেন। তাই একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার লক্ষ স্থির রাখতে হবে এবং নিজের প্রতি কনফিডেন্স রাখতে হবে।
ঝুঁকি নেয়ার মানসিকতা তৈরি করা
সফল উদ্যোক্তারা সকলই তাদের ব্যবসার মধ্যে খুব চিন্ত ভাবনা করে ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চাইলে ঝুঁকি আপনাকে নিতেই হবে। আর সেই ঝুঁকিটা নিতে পরিকল্পনা, বাজারের চাহিদা আরো কিছু সংশ্লিষ্ট ব্যাপার গবেষণা করে। আর সকল সফল উদ্যোক্তারা এই ধরণের ঝুঁকি নিতে থাকেন প্রস্তুত সর্বদা। আরোও সহজ করে বললে, সুযোগ বুঝে কোপ দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
শেখার মানসিকতা তৈরি করা
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিজের মধ্যে শেখার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। একজন সফল উদ্যোক্তা তার চারপাশের সব কিছু থেকে শেখার চেষ্টা করেন। ভুল হতেই পারে, যদি ভুলই না করেন তো শিখবেন কোত্থেকে,ভুল থেকে শেখার চেষ্টা করেন। নতুনভাবে তা ব্যবসায়ে কাজে লাগান সফল আপনি হবেনই।
সুযোগ সন্ধানী হওয়া
তারা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। ভাল একটি সুযোগ কোন উদ্যোক্তার হাত থেকে খসে পড়ে না। আর তা হলে তাঁরা সফল উদ্যোক্তা হতেন না। ভাল সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকা সফল উদ্যোক্তাদের আরেকটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য।
মূলধন নিয়ে সচেতন থাকা
আমাদের দেশে ইনভেস্টর পাওয়া অনেক কঠিন একটা ব্যাপার, তাই এ ব্যাপারে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে,অন্তত এক বছরের মূলধন নিয়ে আপনাকে মাঠে নামতে হবে। সরকারী ভাবেও ইনভেস্ট পাওয়া যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে,এ ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে এবং অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিভিন্ন আইডিয়ার উপর ইনভেস্ট করে থাকেন। সে দিকেও নজর রাখতে হবে ।
উদ্যোক্তাদের জন্য সুখবর হল তাদের জন্য ডেডিকেটেড একটি প্ল্যাটফর্ম উদ্যোক্তাগিরি ডট কম । Uddoktagiri – উদ্যোক্তাগিরি প্ল্যাটফর্ম উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন উদ্যোগ কিংবা স্টার্টআপ গুলোর জন্য চুলচেরা বিশ্লেষণ, আর ও আই (ROI) কনসালটেন্সি, পিচ ডেক ও বিজনেস প্লান তৈরি, প্রোমোশন, কেস স্টাডিজ, গ্রোথ হ্যাকিং, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, ইনভেস্টমেন্ট, বিজনেস ডেভলোপমেন্ট,সাস্টেইনাবিলিটি এবং অন্যান্য রিলেটেড সহায়তা প্রদান করছে।