Web
Analytics
একজন বিজয়ীর জন্য মানসিক শক্তি বাড়ানোর সেরা ১০ টি কৌশল। - Uddoktagiri Blog
বিনা পুঁজিতে অনলাইন ব্যবসা
একটি বিজনেস আইডিয়াকে বাস্তবায়ন করার ৮টি কৌশল।
September 1, 2018
মেডিটেশন কী
মেডিটেশন কী? মেডিটেশনের উপকারিতা।
September 3, 2018

একজন বিজয়ীর জন্য মানসিক শক্তি বাড়ানোর সেরা ১০ টি কৌশল।

মানসিক শক্তি বাড়ানোর ১০ টি কৌশল

Share this Post on

জীবন নামক এই গোলকধাঁধায় নানা রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। আর এই বিপর্যয়ের মোকাবেলা করার জন্য চাই মানসিক শক্তি। আর মানুষের মানসিক শক্তি প্রখর থাকলে সে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সক্ষম হয়। মানসিক শক্তিই মানুষকে সাফল্যেত দ্বার প্রান্তে পৌছে দেয়। কেননা সাফল্যের সিঁড়ি ডিঙিয়ে উঠতে হলে হোচট খেতেই হয়। আর এখানেই ২ টা দল সৃষ্টি হয়। একদল দিশেহারা হয়ে তাদের পথচলা থামিয়ে দেয়। সফলতার রাস্তা থেকে ব্যর্থতার রাস্তায় প্রেরিত হয়। এবং সারা জীবন ব্যর্থতার তকমা কপালে নিয়ে ঘুরে বেরায়। অপরদিকে আরেক দল তাদের মানসিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে উঠে দাঁড়ায় এবং পরিস্থিতিকে হাতের নাগালে এনে ছুটে চলে দুর্বার। আর কোন ক্ষমতাই তাদের সফলতাকে কুলশিত করতে পারে না। বেলা শেষে তাদের অবস্থান হয় সাফল্যের স্বর্ণশিখড়ে।

মানসিক শক্তি মানুষকে ভিতর থেকে চাঙ্গা করে রাখে। হার না মানার বুলি শিখায়। কঠোর সংকল্পে আবদ্ধ করে রাখে। যার ফলে আত্মবিশ্বাসের খুটি হয় মজবুত। আর এই আত্মবিশ্বাস থেকেই অনুপ্রেরণার বিজ সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর সফলতা অর্জনের মূল দুইটি খুটি আত্মবিশ্বাস আর অনুপ্রেরণা যদি মজবুত হয় তাহলে কোন বাধাই আর সফলতার করিডোরে যাওয়া থেকে আটকাতে পারে না। অন্যদিকে মানসিক শক্তি যেকোনো দুর্যোগময় পরিবেশের মোকাবেলা করার ক্ষমতা প্রদান করে। তাই মানসিক শক্তিকে প্রখর করা জরুরী।

তাহলে আসুন জেনে নেয় মানসিক শক্তি বাড়ানোর কিছু কৌশল,

১. নিজের বিশ্বাসগুলো মূল্যায়ন করুন

প্রত্যেকের নিজের ব্যাপারে কিছু বিশ্বাস ও উন্নয়ন তৈরি হয়। এর মধ্যে থাকে নিজস্ব জীবন ও পৃথিবী সম্পর্কে সাধারণ ধারণা। কেন্দ্রীয় বিশ্বাসগুলো সময় ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। আপনার কেন্দ্রীয় বিশ্বাস নিয়ে সচেতন হন কিংবা না হন, এগুলো আপনার ধারণা, আচরণ ও আবেগের উপর প্রভাব বিস্তার করে। কখনো কখনো কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হয় ভুল ও নেতিবাচক। যেমন, আপনার ধারণা থাকতে পারে যে কখনো সফল হতে পারবেন না আপনি। এ কারণে আপনি পর্যাপ্ত সংখ্যক চাকরির আবেদন নাও করতে পারেন। আবার চাকরির ইন্টারভিউতে এ কারণে নিজের যোগ্যতা ঠিকভাবে তুলে ধরতে নাও পারেন। এভাবে মনের ভেতর রাজত্ব করতে পারে নিজের অপ্রিয় বিশ্বাসগুলো।

নিজের মনের বিশ্বাসগুলো নির্ণয় ও মূল্যায়ন করুন। ভালো কিংবা খারাপ যাই হোকনা কেন, নিজের বিশ্বাসগুলোর দিকে তাকান। এরপর এগুলোর ব্যতিক্রম খুঁজে বের করুন। মনে রাখতে হবে, জীবনে খুব অল্প বিষয়ই সবসময় অথবা কখনো সত্য থাকে। বিশ্বাসগুলো সংশোধন করার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। এ কাজে সফল হলে জীবনের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।

 

২. অন্যের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকুন

অন্যের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হলে দেখবেন তা আপনার নিজের লক্ষ্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদের নিয়ে চিন্তা করতে করতে নিজের কাজটাই আর করা হবে না, মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। তাই অন্যদের নিয়ে চিন্তা করা, তাদের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া বাদ দিন। নিজের উপর ভরসা রেখে, বিশ্বাস রেখে নিজের কাজগুলো মনোযোগ দিয়ে করুন। দেখবেন, সেই কাজেও সফলতা পাবে্ন আর মানসিকভাবেও অনেক শক্তি পাবেন।

 

৩. অতীত নিয়ে ভাবা বাদ দিন

অতীতে যা ঘটে গেছে তা আপনি চাইলেও কখনো বদলাতে পারবেন না। তাই অতীত নিয়ে বসে থেকে মানসিক অশান্তি বাড়িয়ে, বর্তমান সময়টাকে নষ্ট করার কোন মানে হয় না। মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হলে অতীত নিয়ে ভাবা বাদ দিয়ে বর্তমান সময়টাকে নিয়ে চিন্তা করুন। বর্তমান সময়টাকে কীভাবে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানো যায় সেই চিন্তা করুন।

 

৪. মেডিটেশন

মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করতে মনকে নিয়ন্ত্রণ জরুরী। আর মনকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে মেডিটেশনের বিকল্প আর কিছু নেই। মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধ্যান বা মেডিটেশন করা খুব উপকারী একটি বিষয়। যখন নেতিবাচক চিন্তাগুলো মনে আসে তখন মানসিক দৃঢ়তা কমে যায়। এই ধরনের চিন্তা মানসিক শক্তিকে দুর্বল করে দেয়। মানসিকতা দুর্বল হয়ে গেলে আমাদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যায়। আর আমরা জানি আত্মবিশ্বাস একবার হারিয়ে গেলে কাজের অনুপ্রেরণা থাকে না। তখনই অই কাজের উপর আমাদের অনিহা চলে আসে। কাজটি করতে আর আমাদের মন বসে না। ফলে আমাদের সেই কাজটি অসম্পন্ন থেকে যায়। আর আমরা সাফল্যের করিডরের খুব কাছাকাছি এসেও আমরা ব্যর্থতার তকমা কপালে দেই। কিন্তু নিয়মিত মেডিটেশনের অভ্যাস মনকে শান্ত করে এবং দৃঢ় রাখতে সাহায্য করে। আর মন ঠিক থাকলে অনুপ্রেরণার ঘাটতি থাকে না।

৫. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

এটা হয়ত আমাদের প্রায় মানুষই জানি যে মনকে শিথিল রাখতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বিষণ কার্যকারী একটা মাধ্যম। নানা চাপের কারনে আমাদের মন প্রায়শই বিক্ষিপ্ত থাকে। এই চাপ হতে পারে আপনার সংসারের চাপ, পড়ার চাপ, কাজের চাপ ইত্যাদি। আর এই চাপের কারনে মাঝে মাঝে বেচে থাকার আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যায়। জীবনের প্রতী একটা বিরূপ ধারনা পোষিত হয়। আর চাপ নিয়ে কাজ করলে সেই কাজ কখনই ভালো হয় না, এ কথা আমাদের অজানা নয়। তাই আপনার মন ভীষণ বিক্ষিপ্ত এবং অস্থির থাকলে একে নিয়ন্ত্রণের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। এই ব্যায়াম করতে প্রথমে গভীরভাবে শ্বাস নিন। কিছুক্ষণ আটকে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে কয়েকবার ধরে করুন। এই ব্যায়াম আপনাকে শিথিল করতে সাহায্য করবে। এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পানে। নেতিবাচক চিন্তা ও আবেগগুলো থামাতে সাহায্য করবে। এবং যার ফলে আপনি আপনার কর্ম ক্ষেত্রে ভালো করতে পারবেন এবং জীননটাকে সুন্দর মনে হবে।

৬. ইতিবাচক উক্তি পড়ুন

ইতিবাচক চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে ইতিবাচক উক্তি পড়ার বিকল্প আর কিছু নেই। মোটিভেশন ছাড়া জীবনে বেচে থাকা কঠিন। মোটিভেশন আমাদের প্রভাবিত করে, আর এটাকেই আপনাকে কাজে লাগাতে হবে। ইতিবাচক উক্তি পড়লে সেই উক্তি গুলো আমাদের চিন্তাশক্তিকে প্রভাবিত করবে। আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে ইতিবাচক চিন্তা করতে। সঠিক রাস্তা দেখাবে যেই রাস্তা ধরেই সাফল্যের করিডরে পৌঁছানো সম্ভব। অন্যদিকে নেতিবাচক কিছু পড়লে সেটাও আমাদের প্রভাবিত করে, কিন্তু সেটা খারাপ দিকে। যেটা আপনার জীবনে বয়ে আনতে পারে ব্যর্থতা। তাজ ইতিবাচক উক্তি পড়া প্রয়োজন। আর শুধু পড়লেই হবে না, সেই অনুযায়ী আমল করলেই আপনার চিন্তাশক্তি ইতিবাচক হবে।

৭. নেতিবাচক চিন্তার বদলে আসুক ইতিবাচক চিন্তা

আনন্দ, কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টির মতো ইতিবাচক আবেগ শুধু কিছু সময়ের জন্য ভালো নয়৷ বার বার এই সব অনুভূতি ফিরে আসলে জীবন সার্বিকভাবে আরও সুখকর হয়ে ওঠে৷ ইতিবাচক চিন্তাশক্তির ক্ষমতা অনেক। এটি মানুষের আত্মবিশ্বাসকে প্রখর করে তোলে। ফলে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় শতভাগ। আর জীবনে এই দুটি ভিত্তি ঠিক থাকলে বেলা শেষে সুখের হাসিটা আপনার মুখেই ফুটবে। জীবনে সুখ-দুঃখ আছে বটে, কিন্তু কোনো পরিস্থিতির ভালো দিকটির প্রতি মনোযোগ দিলে সত্যি উপকার হয়৷ পাত্রের অর্ধেকটা ভরা দেখলেই ভালো, অর্ধেকটা খালি নয়৷

৮. সহ্য করার অনুশীলন

মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়া মানে মনের আবেগ দেখানো যাবে না, তা নয়। এছাড়া মানসিক সামর্থ মানে আপনার আবেগ বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এভাবে কোন অবস্থায় কেমন আচরণ করতে হবে তা নির্ধারণ করতে পারবেন। মানসিক সামর্থ মানে আপনার অনুভূতির উপর নিয়ন্ত্রণ। অনুভূতি যেন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। মানসিক সামর্থ মানে বিভিন্ন প্রভাবক বুঝে আপনার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা। যদি আপনার উদ্বেগের কারণে নতুন কিছু করতে সমস্যা হয়, তাহলে তা থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর এতে অনুশীলনেও কাজ হতে পারে।

৯. দৈনন্দিন উন্নতি পর্যবেক্ষণ

এখনকার ব্যস্ত পৃথিবী কোনো বিষয়ের সম্পূর্ণ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করে না। এজন্য নিজের মানসিক অগ্রগতি ও অর্জন প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ জন্য সময় বের করতে হবে। প্রত্যেক দিন শেষে নিজের চিন্তা, আবেগ ও আচরণ নিয়ে নতুন কী শিখলেন, তা নিয়ে চিন্তা করুন। নিজের ভবিষ্যৎ মানসিক উন্নতির আশা নিয়ে চিন্তা করতেও ভুলবেন না। মানসিক উন্নতি সবসময়ই করা সম্ভব। কখনো কখনো এ কাজ অনেক কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু নিজের উন্নতিগুলো নিয়ে চিন্তা করলে এক্ষেত্রে অগ্রগতি তাড়াতাড়ি হবে, মানসিক সামর্থও বাড়বে।

১০. মানবিক চর্চা করুন

মানবিকতা শুধু এক্ষেত্রেই শুধু দরকার তা নয় এটা জীবনের প্রত্যেক ধাপেই আপনালে সাহায্য করবে। যারা অমানবিক কার্যক্রমে লিপ্ত তারা কখনই সাফল্যের শীর্ষচূড়ায় অবতরণ করতে পারেননি। তার আগেই ঝরে পরেছেন। অন্যদিকে যারা শান্তি, উদারতা, মানবিকতার পথ ধরে যারা নিজ নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে যান তারা সহজে বিচলিত হন না। তারা বেলাশেষে সাফল্যের স্বর্নশিখড়ে পৌঁছে যান। তাই নিজের ভিতরে মানবিকতার গুনাগুন গুলো ধারন করুন, ক্ষমাশীল হোন। দেখবেন নিজের আগেব, অনুভূতি এবং মনের উপর আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এবং তাতে করে আপনার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

 

Share this Post on