Web
Analytics
কোরবানির বর্জ্য ও আমাদের করণীয়। - Uddoktagiri Blog
উদ্যোক্তা লোন
নতুন উদ্যোক্তারা ব্যাংক লোন পাবেন যেভাবে!
August 16, 2018
সফল ও বিচক্ষণ উদ্যোক্তাদের ভালো অভ্যাস
সফল ও বিচক্ষণ উদ্যোক্তাদের ১০টি ভালো অভ্যাস!
August 18, 2018

কোরবানির বর্জ্য ও আমাদের করণীয়।

কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

Share this Post on

পশু কেনা আর যত্ন-আত্তিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে। সামনে ঈদ-উল-আজহা। আর এ  ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো পশু কোরবানি। এ সময় ঢাকাসহ সারা দেশে লাখ লাখ পশু কোরবানি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতি বছরই সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে ঢাকা মহানগরীসহ সর্বত্র কোরবানির পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হয়। আর বর্জ্য থেকে রোগবালাই ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। এ জন্য কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে আমাদের অবশ্যই নজর দিতে হবে। বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যদি কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হবে। এ জন্য কোরবানির পশুর রক্ত, হাড়, নাড়িভুঁড়ি, মল ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিষ্কার করা দরকার এবং তা যেন পরিবেশকে অস্বাস্থ্যকর করে না তোলে সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখা উচিত। কোরবানি দেওয়ার আগে তাই স্থান নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বসতবাড়ি থেকে কোরবানির জায়গাটা দূরে হলে ভালো হয়। আর কোরবানির পশুর যাবতীয় বর্জ্য গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেললে তা আর পরিবেশ দূষণ করতে পারবে না। তাই কোরবানি দিতে গিয়ে পরিবেশ ও মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যদি যথাযথ ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে কোরবানির পশু নির্ধারিত স্থানে জবাই করা হয় তাহলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে তেমনি অন্যদিকে জবাই পরবর্তী উচ্ছিষ্টাংশগুলো সম্পদে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে। কারণ কোরবানির পশুর রক্তে খুব উৎকৃষ্ট মানের সসেজ তৈরি করা সম্ভব, যা উন্নত অনেক দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পশুর ফেলে দেওয়া নাড়িভুঁড়ি থেকে মানুষের খাদ্য, পাশাপাশি উৎকৃষ্টমানের মাছের খাদ্য বা পশু খাদ্য তৈরি করা সম্ভব। একই ভাবে পশুর হাড় গুঁড়া করে পশু খাদ্য বা উৎকৃষ্ট মানের সার তৈরি করা যায়। বর্জ্যকে এভাবে ব্যবস্থাপনায় আনলে নগর দূষণমুক্ত থাকবে, জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত হবে না। নির্ধারিত স্থানে কোরবানির ব্যবস্থা করলে চামড়া ছাড়ানোর অভিজ্ঞ লোকের সমাবেশ করাও অনেক সহজ হবে এবং সঠিকভাবে চামড়া ছাড়ানো হলে এর মূল্য বেড়ে যাবে।

কোরবানির পশুর গোবর বা অন্যান্য উচ্ছিষ্টের একটি বড় অংশ যদি খোলা জায়গায় বা ড্রেনে ফেলা হয় তাহলে আশপাশে প্রকট দুর্গন্ধ ছড়াবে এবং অনেক ড্রেন বন্ধ হয়ে যাবে, ফলে রাস্তায় ড্রেনের ময়লা উপচে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়াবে। নির্ধারিত পরিচ্ছন্ন জায়গায় কোরবানি দিলে মাংসে আবর্জনা ও জীবাণু মিশ্রণের সম্ভাবনা কম থাকে এবং মানসম্পন্ন মাংস পাওয়া যাবে। এ ধরনের পরিকল্পিত ব্যবস্থা তৈরিতে সিটি করপোরেশনকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। সব এলাকায় তাদের অস্থায়ী নির্ধারিত জায়গা তৈরি করতে হবে, যেন কোরবানির পশু জবাইয়ের পরে উচ্ছিষ্ট রক্ত, হাড়, চামড়া, গোবর, নাড়িভুঁড়ি আলাদা আলাদাভাবে সংগ্রহ ও তা যথাযথ সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব হয়।

 

কোরবানির পর যা করণীয়

  • কোরবানির আগেই বাড়ির পাশে কোনো মাঠে কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় একটা গর্ত তৈরি করে রাখুন।
  • মাংস কাটার সময় উচ্ছিষ্টগুলো যেখানে-সেখানে না ফেলে এক জায়গায় রাখুন। কাজ শেষে সেগুলো গর্তে পুঁতে ফেলুন।
  • পশুর ভুঁড়ি পরিষ্কারের পর সেই আবর্জনা খোলা অবস্থায় না রেখে সেই গর্তে পুঁতে ফেলুন।
  • কোরবানির সব কার্যক্রমের শেষে রক্তে মাখা রাস্তাঘাট ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। জীবাণু যেন ছড়াতে না পারে সে জন্য নোংরা জায়গা পরিষ্কারের সময় স্যাভলন মেলানো পানি ব্যবহার করুন।
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুর চামড়া বিক্রি কিংবা দান করতে হবে।
  • শহরে যারা থাকেন তারা বিচ্ছিন্ন স্থানে কোরবানি না দিয়ে বেশ কয়েকজন মিলে এক স্থানে কোরবানি করা ভালো। এতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাজ করতে সুবিধা হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোরবানির জায়গাটি যেন খোলামেলা হয়। আর জায়গাটি রাস্তার কাছাকাটি হলে বর্জ্যরে গাড়ি পৌঁছাতে সহজ হবে।
  • যেসব এলাকায় সিটি করপোরেশনের গাড়ি পৌঁছানো সম্ভব নয় বা দেরি হবে, সেসব স্থানে বর্জ্য পলিথিনের ব্যাগে ভরে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে।

কোরবানির পর আমাদের সচেতনতাই পারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে। আমরা যেন শুধু পশু কোরবানির মাধ্যমেই ত্যাগ শব্দটি সীমাবদ্ধ না রাখি।

Share this Post on