Web
Analytics
চাকরির বদলে রেস্তোরাঁ ব্যবসা। - Uddoktagiri Blog
একজন উদ্যোক্তার প্রতিদিন যা কিছু মেইন্টেন করা জরুরী
March 21, 2018
ই- কমার্স এবং প্রোডাক্ট প্রফেশনাল ফটোশুট !
March 27, 2018

চাকরির বদলে রেস্তোরাঁ ব্যবসা।

কেওড়া রেস্তোরাঁ

Share this Post on

 

  • বিবিএসের জরিপে গত এক বছরে এক লাখ বেকার বেড়েছে।
  • খুলনার তরুণেরা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থানের পথ বেছে নিয়েছেন।
  • তরুণেরা ঝুঁকছেন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়।

খুলনার তরুণেরা ঝুঁকছেন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা একক বা যৌথভাবে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই ব্যবসা। তাতে শহরে গড়ে উঠছে নতুন নতুন রেস্তোরাঁ। মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং খুলনায় আড্ডা বা সময় কাটানোর জায়গা কম থাকায় রেস্তোরাঁর প্রতি মানুষের আগ্রহও বাড়ছে। লাভজনক হওয়ায় এ ব্যবসায় বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি কিছু তরুণের জন্য খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগও তৈরি হচ্ছে।

তবে রেস্তোরাঁ ব্যবসার এ যাত্রাটি একেবারে নির্ঝঞ্ঝাট নয়, এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের প্রায়ই নানা ধরনের সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। তাতে টিকতে না পেরে অনেক তরুণের উদ্যোগ এরই মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই বছরে খুলনা শহরে অন্তত ৫০-৭০টি নতুন রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। এগুলোর বেশির ভাগের উদ্যোক্তাই তরুণ প্রজন্মের। পিছিয়ে নেই নারী উদ্যোক্তারাও। নতুন আরও কিছু রেস্তোরাঁ চালুর অপেক্ষায় আছে।

গত বছরের নভেম্বরে বয়রা সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে স্নাতক পড়ুয়া পাঁচ বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছেন হাংরি টামি নামের ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। উদ্যোক্তাদের একজন শাহরিয়ার সরদার প্রথম আলোকে বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি একটা কিছু করার তাগিদ থেকে এটি করা। এখন পর্যন্ত ভালোই সাড়া পাচ্ছি।

খুলনা নগরীর পিটিআই মোড়, আহসান আহমদ রোড, শামসুর রহমান রোড, রয়েল মোড়, মডার্ন মোড়, কেডিএ সড়ক, নিউমার্কেট, দৌলতপুর, ডাকবাংলো, ময়লাপোতা মোড়, বয়রা কলেজ রোড ও জিরো পয়েন্টে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন খাবারের দোকান। পুরোনো রেস্তোরাঁগুলোতেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তরুণ উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগ রেস্তোরাঁয় খাবার পরিবেশনেও যুক্ত রয়েছেন নিজেরা।

২০১৬ সালে শহরের শান্তিধাম মোড়ে ‘লাভ বাইটস চায়নিজ অ্যান্ড বাংলা রেস্টুরেন্ট’ চালু করেছেন চার তরুণ। তাঁদের একজন নাজিম আহমেদ খান বলেন, গ্রাহকদের বড় একটা অংশ তরুণ ও শিক্ষার্থী। তাঁদের কথা মাথায় রেখে রেস্তোরাঁয় রাখা হয়েছে সেলফি জোন ও বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ। এ খাতের তরুণ উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ আল মিজান বলেন, ব্যাংকগুলো সব ব্যবসায় ঋণ দিলেও রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ঋণ দিতে চায় না। সহজ শর্তে ঋণ পেলে তরুণেরা আরও ভালো করতেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে দুই বন্ধু শরিফুল ইসলাম ও বাহারুল ইসলাম মিলে গড়ে তুলেছেন কেওড়া রেস্টুরেন্ট। এই রেস্টুরেন্ট ইতিমধ্যে খুলনায় সাড়া ফেলেছে। উদ্যোক্তারা জানান, কেওড়ার বিশেষ খাবার হচ্ছে চুই ঝালের চীনা হাঁসের মাংস ও শাহি পানি।

কেওড়ার পাশেই গত জুলাইয়ে চালু হয়েছে ‘চিটাগং মেজবান বাড়ি’ রেস্তোরাঁটি। এই রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তা ফারিয়া নাজনীন সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। খুলনার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা অন্য চারজন বন্ধুকে নিয়ে চালু করেছেন এই রেস্তোরাঁ। ফারিয়া নাজনীন প্রথম আলোকে বলেন, বাবা-মায়ের ঘাড়ের ওপর থাকার চেয়ে একটা কিছু করার তাগিদ থেকে এ রেস্তোরাঁ ব্যবসার কথা মাথায় আসে। খুলনার মানুষের রুচির ভিন্নতা আনতেই মেজবান বাড়ির যাত্রা শুরু।

তরুণেরা এই ব্যবসায় ঝুঁকছেন কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে এটি একটি স্টাইলিস্ট ব্যবসা। সামাজিকভাবে এই ধরনের উদ্যোক্তাদের একটা আলাদা সম্মান আছে। তা ছাড়া পরিকল্পনামাফিক বিনিয়োগ করতে পারলে মুনাফাটাও একেবারে কম নয়। আবার অনেকে আছেন, যাঁরা প্রচুর বিনিয়োগ করছেন তবে সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় সফল হচ্ছেন না।

খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খুলনায় রেস্তোরাঁ ব্যবসার সম্ভাবনা অনেক। আগে যে ধরনের খাবারে মানুষের আগ্রহ ছিল এখন তা পাল্টেছে। বাইরে খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যে উন্নতি হয়েছে, তার জেরেই আধুনিক ও মানসম্পন্ন রেস্তোরাঁগুলো ভালো ব্যবসা করছে।

তথ্যসুত্র: প্রথম আলো।

Share this Post on