Web
Analytics
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়। - Uddoktagiri Blog
স্টার্টআপ ব্যর্থতা এড়াতে
স্টার্টআপে ব্যর্থতা এড়াতে যে ১৫ টি কাজ করতে হবে।
July 30, 2018
কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক একাউন্ট সহ অনন্য জরুরী কাগজপত্র করবেন।
August 1, 2018

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা

Share this Post on

২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন ‘ধরিত্রী রূপান্তর: টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা’ গৃহীত হয়। এমডিজিতে সাফল্যের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল— যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত খসড়া প্রস্তাবনার সুন্দর প্রতিফলন। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ প্রণীত বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবনায় ১১টি অভীষ্ট, ৫৮টি লক্ষ্যমাত্রা এবং ২৪১টি সূচক ছিল। এর মধ্যে ১০টি অভীষ্ট টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর সাথে মিলে যায়। বাকি অভীষ্ট এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিফলিত হয়েছে। এটি অতুলনীয় যে, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে গৃহীত দুটি উন্নয়ন ঘোষণারই (শতাব্দী ঘোষণা ২০০০ ও এসডিজি ২০১৫) স্বাক্ষর প্রদানকারী সরকারপ্রধান। এমডিজিতে অনুস্বাক্ষর করেছেন ১৮৯টি দেশের সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান। এসডিজিতে বাংলাদেশ ছাড়াও ১৯২টি দেশের সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান অনুস্বাক্ষর করেছেন।

জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ায় এই অভীষ্টসমূহ গৃহীত হয়েছে। এসডিজি প্রণয়নে প্রায় ৮৫ লাখ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে দুই বছরের বেশি সময় ধরে (মার্চ, ২০১৩ থেকে আগষ্ট, ২০১৫ পর্যন্ত) এসডিজি নিয়ে আলোচনা হয়। এসডিজি পাঁচটি ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত— জনগণ, ধরিত্রী, সমৃদ্ধি, শান্তি এবং অংশীদারিত্ব। এর মূলমন্ত্র হচ্ছে কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়, যেখানে উন্নয়নের মূলমন্ত্রই হবে টেকসই উন্নয়ন, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থার প্রচলন, সকল স্তরে কার্যকর, জবাবদিহিতাপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অসমাপ্ত কার্যক্রমসমূহ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ক্রস কাটিং বিষয়সমূহ— যেমন: দারিদ্র্য, ক্ষুধামুক্তি, সুস্বাস্থ্য, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প, অসমতা, নগরায়ণ যথাক্রমে এসডিজি ১, ২, ৩, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে: গুণগত শিক্ষা (এসডিজি-৪), জেন্ডার সমতা (এসডিজি-৫), সকলের জন্য সাশ্রয়ী ও দূষণমুক্ত জ্বালানি (এসডিজি-৭), টেকসই প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থাপনা, (এসডিজি ১১-১৫); সুশাসন, (এসডিজি-১৬)। টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব উজ্জীবিতকরণ ও বাস্তবায়নের উপায়সমূহ এসডিজি-১৭-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এসডিজির অভীষ্ট ও লক্ষ্যমাত্রাসমূহকে সরকারের ‘ফ্ল্যাগশিপ ডকুমেন্ট’ হিসেবে বিবেচিত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলের বিভিন্ন অধ্যায়ে সমন্বিত করা হয়েছে; ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে (বর্তমানে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক) আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট এসডিজির বাস্তবায়ন ও পর্যালোচনা সম্পর্কিত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার সাচিবিক দায়িত্ব সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ পালন করছে। এসডিজি’র অভীষ্ট লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রাসমূহের সাথে মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন/কার্য সংশ্লিষ্টতা অর্থাত্ ম্যাপিং নির্ধারণ করা হয়েছে— যার ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়/বিভাগ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রাসমূহ সঠিকভাবে চিহ্নিত করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন/নির্ধারণ করবে। এসডিজি’র পরিবীক্ষণে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসডিজি’র বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণে বাংলাদেশের উপযোগী প্রতিনিধিত্বশীল কিছু সূচক চিহ্নিত করা হয়েছে।

এসডিজি’র বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য একটি জাতীয় পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো প্রণয়ন করা হয়েছে। ভিত্তিবছর হিসেবে ধরা হয়েছে ২০১৪-১৫ সালকে। ১২৭টি সূচকের ক্ষেত্রে ভিত্তিবছরের তথ্য দেওয়া আছে এবং ২০২০, ২০২৫, ২০৩০-এর মধ্যে অর্জনের জন্য লক্ষ্যমাত্রা বিভাজন করে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ অর্জনে কী পরিমাণ অর্থায়নের প্রয়োজন হবে— তা প্রাক্কলনের জন্য ‘এসডিজি ফাইন্যান্সিং স্ট্র্রাটেজি’-সংক্রান্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর্থিক মূল্যায়নে দেখা যায় যে, এসডিজির পূর্ণ বাস্তবায়নে ২০১৪-১৫ সালের স্থির মূল্যে মোট প্রায় ৯২৮.৪৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে। বার্ষিক মোট ৬৬.৩২ বিলিয়ন ইউএস ডলার অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে— যার মধ্যে দেশীয় উত্স হতে আসবে প্রায় ৫৬.৮৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার (এই সময়ে আমাদের গড় বাজেটের আকার হবে বছরে ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। বৈদেশিক উত্স হতে অতিরিক্ত বার্ষিক অনুদান ও সহায়তা আসতে হবে প্রায় ২.২৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। সরকার দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় একডজন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। এ কারণে প্রস্তাবিত সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ পাওয়া সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করি। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার দৃঢ় আশ্বাস পাওয়া গেছে।

এছাড়াও জিইডি কর্তৃক পরিকল্পনা কমিশনের সেক্টর ডিভিশন, মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধীনস্থ অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ে সম্যক ধারণা প্রদানের নিমিত্ত ‘মন্ত্রণালয়/ বিভাগভিত্তিক সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যের লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক সিরিজ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে পরিকল্পনা-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের ও এসডিজি ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তাদেরকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ধারণা প্রদান করা হয়েছে। গত ৪ জুলাই ২০১৮-এ জাতীয় লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক পাঁচ বছরের কর্ম-পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উন্মোচিত হয়েছে। এতে ৪৩টি লিড মন্ত্রণালয়/বিভাগের আগামী পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা দেওয়া আছে।

২০১৭ সালের ১৭ জুলাই ECOSOC-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জাতিসংঘের High Level Political Forum (HLPF)-এ Voluntary National Review (VNR) শীর্ষক এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ ৪৪টি দেশ এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে সরকার, এনজিও, সুশীল সমাজ, শিক্ষক-গবেষক, উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। সমুদয় সমাজকে আমরা সংযুক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছি।

২৪টি মন্ত্রণালয়, বৈদেশিক বাণিজ্য ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমিতে ঢাকা বিভাগীয় উন্নয়ন মেলায়, পিএটিসি সাভার, ইসলামী ফাউন্ডেশনে এসডিজি অবহিতকরণে জিইডি সেমিনার করেছে। সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এসডিজি অভীষ্ট এবং লক্ষ্যগুলোকে বাংলায় অনুবাদ করে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ।

এসডিজি অর্জনে ‘পুরো সমাজকে সম্পৃক্ত’ করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছি আমরা। এসডিজিতে অংশীজনদের অংশগ্রহণ নিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ যৌথভাবে একটি পরামর্শ সভার আয়োজন করে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ইউএনআরসি)। এতে এনজিও, সুশীল সমাজ, উন্নয়ন সহযোগী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত থেকে মতামত ব্যক্ত করেন। এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা নিয়ে সরকার, বেসরকারি খাত ও জাতিসংঘের যৌথ আয়োজনে ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর হোটেল র্যাডিসনে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকার, বেসরকারি খাত এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করে তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। বেসরকারি খাতের ভূমিকা নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ। ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ও বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি এসডিজি বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে একটি একক পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়।

২০১৮ সালের ৪-৬ জুলাই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট বাস্তবায়ন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পর্যালোচনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট-এর সহযোগিতায় এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে দুই হাজার প্রতিনিধি যোগদান করেন। এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পর্যালোচনার মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা। এতে ৪৩টি লিড মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন অগ্রগতি তুলে ধরেন। এর ফলে একদিকে যেমন মন্ত্রণালয়ের মালিকানা তৈরি হবে, অন্যদিকে বাস্তবায়নে দ্বায়বদ্ধতা জন্মাবে। এই সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী ও বেসরকারি সংগঠন এসডিজি বাস্তবায়নে তাদের অগ্রগতি তুলে ধরে। এই সম্মেলনের আরো একটি উদ্দেশ্য হলো— এসডিজি বাস্তবায়নে তাদের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের ভবিষ্যত্ করণীয় কী— তা সকলকে অবগত করা। সম্মেলনে যে চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা হয় তা মোটা দাগে তুলে ধরা হলো:

১) আগামী দিনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো সমাজের আয় বৈষম্য মোকাবিলা ও বেকারদের জন্য শোভন কাজ সৃষ্টি করা। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে ভবিষ্যতে অনেক কাজ পুরাতন হয়ে যাবে এবং এর ফলে অনেকে কাজ হারাবে।

২) উপাত্তের প্রাপ্যতা ও সময়োপযোগী তথ্য প্রাপ্তি অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এসডিজি অগ্রগতি বাস্তবায়নে ফলোআপ-এর অংশ হিসেবে, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সময়োপযোগী তথ্য-উপাত্তের বিকল্প নেই।

৩) বেশির ভাগ মন্ত্রণালয় মানবসম্পদের সক্ষমতার ঘাটতি ও সম্পদের আহরণকে তাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ মনে করে।

৪) জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার দরকার, বিশেষ করে উন্নয়ন সহযোগী ও বেসরকারি সংগঠনের শিক্ষা ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর জোর দেওয়া দরকার।

৫) জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আমরা যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করলেও এটি আমাদের কৃষি খাত ও খাদ্য নিরাপত্তার উপর ক্রমাগত আঘাত হানবে।

৬) পরিবেশ বিপর্যয় রোধ, জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা আরো জোরদার করতে হবে।

৭) এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা, বিশেষ করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ক সেবা প্রদানে ব্যাপক দক্ষতা বাড়াতে হবে।

এসডিজি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাই এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। কার্যকর পরিবীক্ষণ ও অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উপাত্ত সরবরাহের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এছাড়া এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থায়নের উৎস নির্ধারণ এবং সম্পদের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করতে হবে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা দৃঢ়করণ এবং কার্যকর অংশীদারিত্ব বিনির্মাণের পাশাপাশি সরকার, আন্তর্জাতিক এনজিও এবং দেশীয় এনজিওর মাধ্যমে এসডিজির স্থানীয়করণ ও বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং সক্ষমতার বিকাশে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের দেশে উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় কর-জিডিপির হার খুব কম। সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে অর্থায়নের দেশজ নতুন উত্স খুঁজে বের করতে হবে। জনগণকে কর প্রদানে প্রয়োজনীয় উৎসাহ দান করার পাশাপাশি কর প্রদান সহজতর ও ঝামেলামুক্ত করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকি কমানোর কথা ভাবতে হবে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির বাস্তবায়ন সফলতা নির্ভর করছে জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের পরিকল্পনাসমূহের কার্যকর বাস্তবায়নের উপর। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মুখ্য ভূমিকা পালনকারী কর্তৃপক্ষ। তারাই স্থানীয় জনপদে সেবা পৌঁছে দেবে এবং দারিদ্র্য বিলোপ, ক্ষুধা মুক্তি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে। স্থানীয় সরকারকে এসডিজি বাস্তবায়নে সংযুক্ত করা প্রয়োজন। এজেন্ডা ২০৩০-এর মতো একটি সামগ্রিক, জটিল এবং সর্বব্যাপ্ত উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত অর্থেরও সংস্থান করতেই হবে।

লেখক: অর্থনীতিবিদ ও সদস্য (সিনিয়র সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন।

সাসটেইনবল ডেভেলপমেন্ট গোলস নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আর্টিকেল দেওয়া হবে পরবর্তিতে। সাথে থাকুন।

You may also like

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)।

Share this Post on