Web
Analytics
মেডিটেশন কী? মেডিটেশনের উপকারিতা। - Uddoktagiri Blog
মানসিক শক্তি বাড়ানোর ১০ টি কৌশল
একজন বিজয়ীর জন্য মানসিক শক্তি বাড়ানোর সেরা ১০ টি কৌশল।
September 2, 2018
অনলাইনে ব্যাবসা
অনলাইনে ব্যাবসা শুরু করার পূর্ববর্তী কিছু কৌশল!
September 4, 2018

মেডিটেশন কী? মেডিটেশনের উপকারিতা।

মেডিটেশন কী

Share this Post on

মেডিটেশন কী?

মেডিটেশন হচ্ছে মনের ব্যায়াম। নীরবে বসে সুনির্দিষ্ট অনুশীলন বাড়ায় মনোযোগ, সচেতনতা ও সৃজনশীলতা। মনের জট যায় খুলে। সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। হতাশা ও নেতিবাচকতা দূর হয়। প্রশান্তি ও সুখানুভূতি বাড়ানোর পাশাপাশি ঘটে অন্তর্জাগৃতি।

 

প্রাচ্যের সাধনা আর আধুনিক বিজ্ঞানের নির্যাসে সঞ্জীবিত কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন প্রক্রিয়া। সাধকদের সাধনা ও মনোবিজ্ঞানের প্রক্রিয়ার সমন্বয়ের ফলে সহজে মেডিটেটিভ লেভেলে পৌঁছে আত্মনিমগ্ন হওয়া যায়। গভীর আত্মনিমগ্নতা আত্মশক্তির জাগরণ ঘটায় ভেতর থেকেই। আর অন্তরের জাগরণ বদলে দেয় জীবনের বাকি সবকিছু।

কেন মেডিটেশন করা প্রয়োজন?

মেডিটেশন হলো সচেতনভাবে দেহ মন এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করার আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া। মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে শিথিল এবং মন ও মস্তিককে প্রশান্ত করতে পারি। ফলে টেনশন অস্থিরতা মুক্ত হয়ে আমরা সচেতনভাবে দেহ-মনে সুখানুভূতি তৈরি এবং সবসময় তা উপভোগ করতে পারি। দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি কাজ করতে পারি আনন্দ নিয়ে, পেতে পারি সহজ সাফল্য। অর্থাৎ শারীরিক মানসিক বৈষয়িক প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশান্তিতে থাকার জন্যে, মেডিটেশন হচ্ছে দেহমনে সে অবস্থা সৃষ্টির একটি সহজ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।

যেমন, টেনশন। মেডিটেশনের প্রথম লাভই হলো টেনশনমুক্তি। বলা হয় টেনশন ও শিথিলায়ন একসাথে থাকতে পারে না। যে শরীরে টেনশন থাকে, সে শরীরে শিথিলায়ন থাকে না। আর শিথিল হলে টেনশন পালিয়ে যায়। আর আমরা এখন জানি, মনোদৈহিক ৭৫ ভাগ রোগের কারণই টেনশন। তাই মেডিটেশন করলে আপনি অনায়াসেই শতকরা ৭৫ ভাগ মনোদৈহিক রোগ যেমন মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিস, ঘাড়ে-পিঠে-কোমরে বা শরীরের যেকোনো স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা, হজমের সমস্যা, আইবিএস, এসিডিটি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অনিদ্রা প্রভৃতি রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। বা হলে নিরাময় হতে পারবেন। আর অন্যান্য রোগ নিরাময়েও ওষুধ ও সার্জারির পাশাপাশি সুস্থ জীবন-দৃষ্টি এবং মেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি মেডিটেশন করার মাধ্যমে শিখবেন অখণ্ড মনোযোগ ও অল্পসময়ে পড়া আয়ত্ত করার টেকনিক। একজন গৃহিণী হিসেবে আপনি মেডিটেশন করে পাবেন সুখী পারিবারিক জীবন যাপনের আনন্দ। একজন পেশাজীবী হয়ে সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে আপনি নিতে পারবেন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আর একজন সফল মানুষ হওয়ার জন্যে মেডিটেশনে মনছবি চর্চা করে আপনি আপনার জীবনের যেকোনো চাওয়াকে পরিণত করতে পারেন স্বতঃস্ফূর্ত পাওয়ায়।

আর ইবাদত উপাসনায় একাগ্রতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মিক আধ্যাত্মিকভাবে আপনি অগ্রসর হতে পারেন ধ্যানের পথ ধরে। এভাবে একটি প্রশান্ত মন, সুস্থ জীবন ও কর্মব্যস্ত সুখী জীবন যাপনের জন্যেই আপনার প্রয়োজন মেডিটেশন করা।

 

কীভাবে করবেন ?

খুব সাধারণ কিছু নিয়ম অনুসরণ করে আপনি অনায়াসেই হারিয়ে যেতে পারেন মেডিটেশনের গভীরে। ধ্যানের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারেন দেহের স্বাস্থ্য উদ্ধারে, মেধার বিকাশে, সম্ভাব্য সংকট নিরসনে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে, চেতনার অভ্রভেদী বিস্তারে।

মেডিটেশনের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে আপনাকে বেছে নিতে হবে একটা শান্ত নিরিবিলি জায়গা যেখানে কিছুক্ষণ সময় আপনি নিজের মতো করে কাটাতে পারবেন। প্রথমেই সহজভাবে বসুন। যেভাবে বসতে আপনি আরামবোধ করেন। এটা আপনি মেঝেতে বা বিছানায় বসতে পারেন বা পারেন চেয়ারে বসতে।

শুরু করার আগে আপনার যেকোনো একটি আনন্দের ঘটনা বা স্মৃতিকে মনে করুন। মনে নিয়ে আসুন একটা আনন্দভাব।

এবার হালকাভাবে চোখ বন্ধ করুন। চোখের দুই পাতাকে ধীরে ধীরে জোড়া লেগে যেতে দিন। এবার নাক দিয়ে লম্বা দম নিন। আস্তে আস্তে মুখ দিয়ে দম ছাড়ুন। দম নিতে নিতে আপনি ভাবতে পারেন প্রকৃতি থেকে অফুরন্ত প্রাণশক্তি আপনার শরীরে প্রবেশ করছে। আর দম ছাড়তে ছাড়তে ভাবতে পারেন শরীরের সকল দূষিত পদার্থ বাতাসের সাথে বেরিয়ে যাচ্ছে। এবার কিছুক্ষণ ধীরে ধীরে নাক দিয়ে দম নিন, ধীরে ধীরে নাক দিয়ে ছাড়ুন। এবার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন দমের ওপর। মনের চোখে কল্পনা করুন বাতাস কীভাবে নাক দিয়ে ঢুকছে, নাক দিয়ে বেরুচ্ছে। বাতাস স্বাভাবিকভাবে যাওয়া-আসা করুক। আপনি শুধু দমের প্রতি মনোযোগ দিন। এভাবে কিছুক্ষণ দম নেয়া এবং দম ছাড়ার পর আপনি অনুভব করবেন যে আপনার শরীর শিথিল হয়ে আসছে।

এখন আপনি কল্পনা করুন একটা চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ যেটাকে কল্পনা করলেই আপনার মন প্রশান্তি/ আনন্দে ভরে উঠবে। এটাকে বলা যেতে পারে আপনার মনের বাড়ি। যে স্তরে মনের যেকোনো কল্যাণমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্রেনকে আপনি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারবেন। যেমন- মনে মনে বলতে পারেন, এখন থেকে আমার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়বে। আমার মনোযোগ বাড়বে। শরীর ও মন সবসময় সুস্থ থাকবে।

এবার জেগে ওঠার পালা। কিছুসময়- এটা ১০/ ১৫ বা ২০ মিনিটও হতে পারে-মনের এক চমৎকার প্রশান্ত অবস্থায় কাটিয়ে আপনি মেডিটেশন থেকে বাস্তবে ফিরে আসবেন।

 

Share this Post on