Web
Analytics
আমাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোসের জীবনী। - Uddoktagiri Blog
কৌশলগত বাজারজাতকরণ
কৌশলগত বাজারজাতকরণে সফলতা নিশ্চিত!
October 13, 2018
সফল ৪ জন বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তা
সফল ৪ জন বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তার পথচলার গল্প!
October 15, 2018

আমাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোসের জীবনী।

জেফ বেজোসের জীবনী

Share this Post on

নিউ মেক্সিকোতে জ্যাকলিন ও জর্জেনসেন দম্পতির ঘরে ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি জেফের জন্ম। জেফের মা-বাবার সংসার এক বছরও টেকেনি। ছোটবেলাতেই টেক্সাসে নানাবাড়িতে চলে আসেন জেফ বেজোস। জেফের বয়স যখন চার, তখন তাঁর মা জ্যাকলিন বিয়ে করেন মিগুয়েল মাইক বেজোসকে। এই সৎবাবার বংশ পদবিই ব্যবহার করতে থাকেন জেফ বেজোস।

 

শীর্ষ ধনী কিংবা সফল ব্যক্তিদের অনেকের বেলায় যেমনটা দেখা যায় একেবারে সাধারণ জায়গা থেকে উঠে আসা, জেফের বেলায় ব্যাপারটা তেমন নয়। জেফ যখন ছোট, মা জ্যাকলিনের পরিবারের জমির পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার একর। মায়ের কাছ থেকে পাওয়া জমি এবং পরে নিজের কেনা জমি মিলিয়ে ২০১৫ সালের মার্চ মাসে জেফ বেজোস হয়ে ওঠেন টেক্সাসের সবেচেয়ে বেশি পরিমাণ জমির মালিক।

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই দেখা যায় জেফ বেজোসের মধ্যে। ছোট ভাইবোনের জন্য এটা সেটা দিয়ে তিনি তৈরি করতেন নানা খেলার নানা জিনিস । নিয়মিত বিজ্ঞানের নানা আয়োজনে অংশ নিতেন তিনি । ১৯৮৬ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক হন জেফ বেজোস। স্নাতক হওয়ার পর জেফের পেশাজীবন শুরু হলো। তবে তা জমিজমা বা অ্যামাজন ডটকম দিয়ে নয়; প্রভাবশালী শেয়ারবাজার ওয়াল স্ট্রিটে কাজ শুরু করেন। তখন তিনি বড় বড় কোম্পানির কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করতেন। এরপর দু-একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন অ্যামাজন ডটকম।

 

জেফ বেজসের প্রথম চাকরি ছিল ফিটেল নামের একটি স্টার্টআপ টেলিকম প্রতিষ্ঠানে। অ্যামাজন প্রতিষ্ঠার আগে তিনি এধরনের আরও কিছু চাকরি করেছিলেন।

 

বেজোস জানিয়েছিলেন, বিশ্বের সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের পরিকল্পনা তিনি নিউইয়র্ক থেকে সিয়াটলে গাড়ি চালানোর সময় করেছিলেন।

 

তিনি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন একদম পছন্দ করেন না। আর এজন্য তার প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নিষিদ্ধ। এখানে কর্মীরা চার থেকে ছয় পৃষ্ঠার মেমো আকারে তাদের প্রপোজাল দেয়।

 

বেজোস সবসময় ‘টু পিৎজা রুল’ অনুসরণ করেন। অর্থাৎ নিয়ম অনুযায়ী, একটি টিমে কেবল মাত্র দুটি পিৎজা শেষ করার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তিনি বিশ্বাস করেন ছোট টিম অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।

 

জেফ বেজোস বই পড়তে ভালোবাসেন এবং তিনি সবসময় তার কর্মীদের বই পড়তে উৎসাহিত করেন।

 

জেফ বেজোস স্পেস ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি উৎসাহী। তিনি স্পেস স্টেশনে মানুষের জন্য কলোনি তৈরির কথাও বলেন। ২০০৩ সালে বেজোস প্রায় তার জীবন হারাতে বসেছিলেন। একটি মারাত্মক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার মাথায় আঘাত পান। এবং ওই ঘটনার পর থেকে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন।

 

২০১৩ সালে জেফ বেজোস ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট কিনে নেন। তিনি বলেন, পত্রিকার সম্পাদকীয় নির্দেশনায় তিনি যুক্ত হবেন না।

 

ব্যবসা পরিচালনা, নতুন উদ্যোগের পরিকল্পনা—কাজের ক্ষেত্রে জেফ বেজোসের নিজস্ব একটা স্টাইল রয়েছে। অ্যামাজন শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে সিয়াটলে গাড়ি চালিয়ে যান জেফ। আর সেটা নাকি ছিল অ্যামাজনের ব্যবসা পরিকল্পনার একটা অংশ। নিজের বাড়ির গ্যারেজেই শুরু করেছিলেন অ্যামাজনের কাজ।

 

জেফ বেজোস সেই বিরল সিইওদের একজন, যিনি সব কর্মী নিয়োগের সময় ইন্টারভিউ বোর্ডে নিজে উপস্থিত থাকেন। অ্যামাজনের প্রথম এক দশকে এই নিয়মের তো কোনো ব্যতয়ই ঘটেনি। প্রযুক্তির সংবাদভিত্তিক অনলাইন গণমাধ্যম ওয়্যারড ২০০০ সালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। অ্যামাজনের প্রত্যেক কর্মীর নিয়োগ সাক্ষাৎকারে উপস্থিত থাকতেন প্রতিষ্ঠানের সিইও। তিনি সাদা বোর্ডে নিয়োগপ্রার্থীর জন্য নানা প্রশ্ন, তথ্য-উপাত্ত লিখে রাখতেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন। অ্যামাজনের একজন সাবেক কর্মী বলেছিলেন, জেফ সব সময় চাইতেন নতুন যে কর্মী যোগ দেবেন অ্যামাজনে, তাঁর দক্ষতা ও মেধা অন্যদের থেকে হবে বেশি।

 

নিজের ব্যবসায় উদ্যোগকে শুধু অ্যামাজনেই আটকে রাখেননি জেফ। ২০১৩ সালে কিনে নেন বিশ্বখ্যাত পত্রিকা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। ২০০০ সালে একেবারে অন্য রকম প্রতিষ্ঠান গেড়ন জেফ। ব্লু অরিজিন নামের এই প্রতিষ্ঠান যাত্রীবাহী মহাকাশযান তৈরি করে। মহাকাশে বিলাসবহুল হোটেল, পার্ক, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি বানানোর কাজে লেগে আছে জেফের এই প্রতিষ্ঠান। গুগলে বিনিয়োগ রয়েছে জেফ বেজোসের। প্রযুক্তিভিত্তিক সাড়া জাগানো উদ্যোগে বেজোস এক্সপিডিশন নামে বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন বেজোস। আংশিক হলেও বেজোসের বিনিয়োগ আছে এমন প্রতিষ্ঠানের তালিকায় টুইটার, উবার, এয়ারবিএনবি থেকে শুরু করে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অ্যামাজনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানও কম নয়। অ্যালেক্সা ইন্টারনেট, এ নাইন ডটকম ইত্যাদি আছে এই তালিকায়।

 

এছাড়াও অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও রয়েছে জেফ বেজোসের । ২০১৬ সালে স্টার ট্রেক বিওয়াইন্ড– এ অভিনয়ও করেন তিনি।

নিজের মতো করে ব্যবসা চালিয়েই তো আজ জেফ বেজোস বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী। এজন্যই আজ তার নাম ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । 

Share this Post on