Web
Analytics
ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম থাকলে সফলতা আসবেই। - Uddoktagiri Blog
বাজারজাতকরণে তথ্য ব্যবস্থাপনা
বাজারজাতকরণে তথ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব।
October 8, 2018
কৌশলগত বাজারজাতকরণ
কৌশলগত বাজারজাতকরণে সফলতা নিশ্চিত!
October 13, 2018

ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম থাকলে সফলতা আসবেই।

ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম

Share this Post on

চাকরি নয় অন্যদের চাকরি দেয়ার লক্ষ নিয়েই বড় হয়েছি। ব্যাবসা যখন শুরু করবো তখন বাড়ি ভাড়া নেওয়ার দরকার ছিল। হাজারিবাগ এলাকায় কোনো মেয়ে ব্যাবসায়ী ছিল না, তাই জায়গা ভাড়া করা নিয়ে করতে হত সংগ্রাম। অনেক কষ্টে মিলল জায়গা। স্বপ্ন বাস্তবেও রুপান্তর হতে লাগলো। চামড়াজাত পণ্য তৈরিতে আমার তখন পুঁজি খুবই কম ছিল, তাছাড়া  চারপাশের মানুষের কটুক্তি তো ছিল ই। তবে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাড়াইনি। বরং সে কথা গুলি অনুপ্রেরনা দিয়েছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। শুধু দেশে নই দেশের বাইরেও পণ্য সরবরাহ শুরু হল। আমার পণ্য যেতে শুরু করল কানাডা ও সুইডেন এ। সততা আর মনবল নিয়ে যে কাজ শুরু করেছিলাম ২০০৫ সালে, তার ফল পেতে শুরু করেছি এখন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল। বিশেষ করে দেশিও পণ্যের প্রতি ছিল আলাদা ভালোবাসা। আর এই থেকেই শুরু হয়েছিল তার ব্যাবসা।

 

তানিয়া পড়াশোনা করেছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেসময় থেকেই টুকটাক ব্যবসা শুরু করেন। আর যেহেতু নিজের পড়াশোনার বিষয়ই লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, তাই সেখান থেকে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে ভাবনার কথা মাথায় আসে তার। পরিবারের কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যে না থাকলেও নিজের মনোবল নিয়ে কাজ শুরু করেন। আস্তে আস্তে করে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন তিনি। আজ তার সেই ব্যবসায়ের বার্ষিক লেনদেন এক কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু ব্যবসার শুরুতে বেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে মিস ওয়াহাবকে। কারণ এক নারী চামড়ার পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবে তা তখন লোকে সহজভাবে নিতো না।

 

বাংলাদেশ ইনস্টিিটউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে অনার্স পড়ার সময় থেকে টুকটাক ব্যবসা শুরু। এরপর পড়াশোনার সূত্র ধরেই চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করার চিন্তা মাথায় আসে। যদিও নামীদামি কোম্পানির চাকরির সুযোগ ছিল, কিন্তু সেসব বাদ দিয়ে চামড়াজাত পণ্যের উৎপাদন আর সেগুলো বাজারে ছাড়ার কাজটা শুরু হলো শেষ বর্ষে পড়ার সময়। করপোরেট উপহার সরবরাহ থেকে শুরু। সেটা শুধু চামড়ার পণ্যে সীমাবদ্ধ না হয়ে কৃত্রিম চামড়া, পাট, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি ডায়েরির মলাটা, কনফারেন্সের ব্যাগ, ওয়ালেটসহ নানা রকম উপহারপণ্য। শুরুটা ছিল এভাবে। তিনি বর্তমান একটি  অনলাইন গিফটশপ ট্যান-এর স্বত্বাধিকারী।

 

জানা গেল, ২০০৮ সালে সেরা এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার অর্জন করেন তানিয়া। তারপর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার থেকে নির্বাচিত হয়ে ইতালির মিপেল মেলায় অংশ নেয় তার প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেলোশিপ পান, যেখানে ১৯টি দেশের ১৯ জন নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া পেনসাকোলা সিটির গভর্নরের কাছ থেকে অনারারি সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট লাভ করেন, যাকে ব্যবসায়ীক জীবনের অন্যতম অর্জন হিসেবে দেখেন তিনি।

 

২০১৩ সালে আউটস্ট্যান্ডিং উমেইন ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পান তিনি ২০১৪ সালে কাজি নজরুল ইসলাম স্বর্ণ পদক পান তিনি । ২০১৫ সালে মহিলা পরিষদ থেকে বিশেষ সম্মাননা পান তিনি ,২০১৬ তে জাপানের টোকিও এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্র , মালয়েশিয়া, জার্মানি সহ ১৭ টি দেশ ভ্রমন করেন তিনি।

 

ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায়। আমি উদ্যাক্তাদের প্রশিক্ষণ দিই। তাঁদের উদ্যোগে পরামর্শক হিসেবেও কাজ করি। তরুণ প্রজন্মের কিছু উদ্যোক্তার মেন্টর হিসেবেও কাজ করছি। স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নিয়ে। আত্মবিশ্বাস সৎ সাহস আর ধৈর্য দিয়ে অনেক কিছুই জয় করা সম্ভব। কাজকে পুরোপুরি ভালোবেসেই এগিয়ে যেতে হবে। যত বাধাই আসুক, থেমে যাওয়া চলবে না। এই ছিল তানিয়া ওয়াহাবের সফলতার গল্প।

 

 

 

 

Share this Post on