Web
Analytics
বাজারজাতকরণে তথ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব। - Uddoktagiri Blog
পি আর এজেন্সি
পি আর এজেন্সি কি এবং এই এজেন্সির কাজগুলা।
October 4, 2018
ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম
ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম থাকলে সফলতা আসবেই।
October 11, 2018

বাজারজাতকরণে তথ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব।

বাজারজাতকরণে তথ্য ব্যবস্থাপনা

Share this Post on

বাজারটা প্রতিযোগিতার। বাজারে আপনি যখন একা কোনো পন্য নিয়ে ব্যবসা করছেন তখন আপনার প্রতিযোগিতা হচ্ছে প্রচলিত বাজারের সাথে। কারণ প্রচলিত বাজার ব্যবস্থায় যেভাবে পন্যসমূহ ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করছে সেভাবে ভোক্তাদের জীবন যাপন গড়ে উঠেছে। অথবা ভোক্তাদের জীবন যাপনের উপর বাজার ব্যবস্থা বিকশিত হয়েছে। সেখানে নতুন ধারণা বা নতুন পন্য বা নতুন কম্পানী প্রতিষ্ঠা করা মানে বাজারের বিদ্যমান ব্যবস্থার সাথে প্রতিযোগিতা করা।

 

আর যখন একই পন্য নিয়ে একাধিক ফার্ম কাজ করছে। তখন চাহিদা ব্যাপক থাকলেও প্রতিযোগীতা প্রকট হয়ে পড়ে। মানে ব্যাপক প্রতিযোগিতা চলে। এমন পরিস্থিতিতে যারা বাজার সম্পর্কে যত ভালো জানবে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে বাজার দখল নিতে পারবে। আর এই জানার ব্যাপারটাই হলো তথ্য। বাজারে ক্রেতা কতজন, তাদের লাইফস্টাইল ও পন্যাভ্যাস কি? মানে তারা কোন পন্য কেন ব্যবহার করে। সেটা না পেলে তারা কোনে পন্য ব্যবহার করতো। অথবা কোন সুবিধা পেলে তারা সে পন্য পরিবর্তন করতে পারে। ইত্যকার নানা তথ্য যার কাছে থাকবে তারই বাজিমাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

আসুন আমরা আজ এই বিষয়ে একটু কথা বলে নেই। বিষয়টা কি যেন? ও হ্যাঁ মার্কেটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন। তার মানে যেসব বিষয়ে তথ্য থাকা দরকার সেগুলো হল-

 

১. বাজারের আকৃতি ও প্রকৃতি

বাজারের আকৃতি প্রকৃতি বলতে ঠিক কতজন ভোক্তা এই বাজারের সাথে সম্পৃক্ত আছে এবং ভবিষ্যতে এটা কি পরিমাণ বাড়তে বা কমতে পারে। আপনি যদি একজন ই কমার্স ব্যবসায়ী হন তাহলে আপনি হিসেব করুন যে, আপনি যেসব এলাকায় পন্য পাঠাতে পারবেন সেসব এলাকার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত? তাদের মধ্যে কতজন মোবাইল আর কতজন পিসি ইউজার। কোন বয়সের কতজন? আপনার পন্যটি কতজনের দরকার হতে পারে? তার মধ্যে কতজনের সামর্থ আছে? তারমধ্যে কতজন কিনতে পারে? ইত্যকার নানা তথ্য আপনার কাছে থাকতে হবে। সেটা হয়তো আপনি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে নেবেন নয়তো নিজে গবেষণা করে বের করবেন।

 

২. ভোক্তাদের চাহিদা

আপনি যে পন্যটি নিয়ে ব্যবসা করবেন? তার চাহিদা কেমন? সেটাকি আবশ্যিক পন্য নাকি ঐচ্ছিক নাকি বিলাসপন্য। পন্যটি ভোক্তাদের ব্যবহার করা কেন প্রয়োজন? ভোক্তারা এ ধরনের পন্যের অভাব বোধ করছেন কিনা? বর্তমানে এর চাহিদা কেমন হতে পারে? ভবিষ্যত সম্ভাবনা কতটুকু? এসব বিষয় জানলে পরে আপনি পন্যটিকে ভোক্তাদের প্রয়োজনের সাথে মিলিয়ে পরিবেশন করতে পারবেন।

 

৩. বাজারজাতকরণ জটিলতা ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন

প্রতিনিয়ত বিশ্বের জীবনমান উন্নত হচ্ছে। বিভিন্ন পদ্ধতি, কাঠামো এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধারণা বদলে যাচ্ছে। আবার অন্যদিকে বিভিন্ন নতুন ব্যবস্থাপনা ও মাধ্যম আসার কারণে বাজার ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াগত উন্নতি ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে বাজার থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাজারে কি ধরনের পরিবর্তন এসেছে, আসতে চলেছে এবং ভবিষ্যতে আসবে এ সম্পর্কে খোজ খবর রাখা চাই। যেহেতু কোনো নতুন মাধ্যম আমাদের দেশে আসার আগে উন্নত বিশ্বে প্রচলন শুরু হয় তাই এগুলো আমরা পত্রপত্রিকা ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেনে নিতে পারি। মার্কেটে সে এগিয়ে থাকে যে প্রথম কিছু দেখায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।

 

৪. অর্থনৈতিক বৈশিষ্টের পরিবর্তন

ব্যক্তি, শ্রেণী এলাকা কিংবা পেশাভেদে মানুষের আর্থিক ক্ষমতার তারতম্য দেখা দেয়। তেমনি করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির স্থায়ী কিংবা অস্থায়ীভাবে নিয়মিত কিংবা অনিয়মিত আর্থিক সক্ষমতা বদলে যেতে পারে। যেমন মাসের মাসের দিকে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর লোকদের হাতে টাকা থাকেনা এটা অস্থায়ী তবে নিয়মিত। ঈদের সময় মানুষের হাতে টাকা থাকে। যেমন সিডরের কারণে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের মানুষ কর্পদকশূণ্য হয়ে পড়েছে। এমন নানা কারণ যেমন বেতন বৃদ্ধি, তেলের দাম বৃদ্ধি, চালের দাম বৃদ্ধি ইত্যকার নানা কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। একজন ব্যবসায়ী বাজারজাতকরণ পরিকল্পনায় অবশ্যই বিষয়গুলোকে অন্তভূক্ত করবে।

 

৫. পন্যের উপযোগিতার হ্রাসবৃদ্ধি:

উপরের বিষয়গুলো ঠিক থাকার পরও কখনো কখনো পন্যের চাহিদা কমতে বা বাড়তে পারে। এটা স্রেফ পন্যটির গুনাগুন নষ্ট হওয়ার বা উন্নতি হওয়ার কারণে হতে পারে। হতে পারে তার দাম বাড়া কমার কারণেও। এমনকি বিকল্প পন্যের দাম কমা বাড়ার কারণেও এমনটা হতে পারে। যেমন ময়দার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আটার বিক্রি বেড়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে উৎপাদিত স্ট্রবেরী প্রথমদিকে টক হতো এখন কিছুটা মিস্টি হয় এর কারণে পন্যটির বিক্রি বাড়তে পারে দাম বাড়ার পরও।

তাহলে একজন ব্যবসায়ীকে বা একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের মার্কেটিং পরিকল্পনা তৈরী করার জন্য বাজার সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করবে সেগুলোর বিশ্লেষন করবে। সম্ভব হলে কয়েক বছরের তথ্য সংগ্রহ করে তার গতি প্রকৃতি যাচাই করবে। এতে করে সঠিক সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে থাকবে।

জাহাঙ্গীর আলম শোভন 

Share this Post on