Web
Analytics
প্রতিটি উদ্যোক্তার দেখা প্রয়োজন এমন ১০ টি মুভি। - Uddoktagiri Blog
প্রতিটি উদ্যোক্তার প্রয়োজন এমন ১০ টি বই।
August 18, 2018
অনলাইনে ব্যাবসা
ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা ১০ টি কৌশল।
August 18, 2018

প্রতিটি উদ্যোক্তার দেখা প্রয়োজন এমন ১০ টি মুভি।

উদ্যোক্তার দেখা প্রয়োজন এমন ১০ টি মুভি

Share this Post on

এখনকার সময়টাকে মোটিভেশনের সময় বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। কেননা চারদিকে এখন মোটিভেশনাল স্পিচ, মোটিভেশনাল আর্টিকেল, মোটিভেশনাল ট্যুর সবকিছুর জোয়ার বইছে। আপনি যদি সিনেমার জগতেও মোটিভেশন খুঁজতে যান তাহলে আজকের এই লেখাটি আপনাকে উৎসর্গ করা হলো। জীবন যখন হতাশায় ডুবে যায়, সবকিছুকে যখন তুচ্ছ মনে হয়, তখনই জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন হয়। আর বিনোদন হিসেবে যদি এমন কিছু চলচ্চিত্রকে বেছে নেয়া যায় যা আপনার অবসর সময়টুকুতে সুন্দর ভবিষ্যত গঠনের বীজ বুনে দেবে। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক এমন কিছু মোটিভেশনাল সিনেমা সম্পর্কে যা আপনার দুঃখ ভারাক্রান্ত বা ব্যর্থ জীবনে অনুপ্রেরণার সুবাতাস বইয়ে দিবে।

 

১.পারস্যুট অফ হ্যাপিনেস

দীর্ঘদিন ধরে চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন, অথচ একটা ভালো অফারও পাচ্ছেনা না? হাতে চলার মতো একটা টাকাও নেই, সন্তানের ছোটখাটো কোনো শখ পূরণের সামর্থ্য নেই, জীবনসঙ্গী তার একার আয়ে আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না, থমকে গেছে সংসারের চাকা। অপেক্ষা করতে করতে যখন মনে হবে এই জীবন রেখে আর কী হবে, ঠিক তখনই একবার দেখে ফেলুন ‘পারস্যুট অফ হ্যাপিনেস’ চলচ্চিত্রটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিতে উদ্যোক্তা ক্রিস গার্ডেনারের জীবনের এক বছরের কঠিন সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক গ্যাব্রিয়েল মুচিনো। গৃহহীন এক সেলসম্যান তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ক্রিস্টোফার আর স্ত্রী লিন্ডাকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় কোনমতে দিন কাটাচ্ছিল। প্রতি মাসে তার যে স্ক্যানার বিক্রি করার কথা ছিল, চুক্তিমতো তা বিক্রি করতে ব্যর্থ হয় সে। জমতে থাকে ট্যাক্স, বিলের পর বিল, বাড়িভাড়া, ছেলের লেখাপড়ার খরচ আর ডে কেয়ারের বেতন। ক্রিস গার্ডেনারের চরিত্রে অভিনয় করা শক্তিমান অভিনেতা উইল স্মিথের কণ্ঠে উচ্চারিত এই কথাগুলো যেন প্রতিটি বাবার হৃদয় নিংড়ে বের হওয়া বাণী.

“Don’t ever let someone tell you that you can’t do something, not even me. You got a dream, you gotta protect it. When people can’t do something themselves, they’re gonna tell you that you can’t do it. You want something, go get it.”

২০০৬ সালে সত্যি সত্যি মিলিয়নিয়র হন ক্রিস গার্ডেনার। টয়লেটে যার রাত কেটেছে, টাকার অভাবে যিনি স্ত্রীর সম্মান রাখতে পারেননি, সেই ক্রিস গার্ডেনার যেন বর্তমান প্রজন্মের প্রতিটি উদ্যোক্তার জীবনযুদ্ধের প্রতীক। যেভাবে তিনি পেশা পরিবর্তন করে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সিনেমাটি মন ছুঁয়ে যাবে যেকোনো শ্রেণীর দর্শকের।

 

২.গুড উইল হান্টিং

পড়াশোনায় আপনি বেশ ভালো, প্রকৃতি প্রদত্ত ক্ষমতায় খুব দ্রুত লেখাপড়ার খুঁটিনাটি জিনিসগুলো ঢুকে যায় আপনার মাথায়। কিন্তু সমস্যা হলো প্রকৃতির এই উপহার আপনার একদম পছন্দ নয়। প্রত্যাশার একগাদা বোঝা মাথার উপরে নিয়ে আপনি যদি ক্রমাগত হাঁসফাঁস করতে থাকেন, তাহলে দেখে নিতে পারেন ‘গুড উইল হান্টিং’ সিনেমাটি।

উইল হান্টিং, এম.আই.টির একজন পরিচারক, গণিতে বেশ দক্ষ। এ বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার নেই। কিন্তু তারপরও নামকরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের চেয়েও দ্রুতগতিতে গণিতের জটিল সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারে সে। কিন্তু এই যোগ্যতা নিয়ে বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বাস নেই তার। জীবনের কঠিন সংগ্রামের মোকাবেলা করা উইল পেশা হিসেবে বেছে নেয় শ্রমিকের কাজ, পুলিশের সাথে দুর্ব্যবহার করে পৌঁছে যায় থানায়। আর সেখান থেকে সে মুখোমুখি হয় সাইকোথেরাপিস্ট শন ম্যাগুয়েরের। অতীত আর ভবিষ্যতের দারুণ এক মেলবন্ধনের হদিস পাইয়ে দেয়া এই থেরাপিস্ট উইলের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। গাস ভ্যান সান্টের পরিচালনায় উইল হান্টিংয়ের চরিত্রে ম্যাট ডেমন, শন ম্যাগুয়েরের চরিত্রে রবিন উইলিয়ামস, আর চাকি সুলিভানের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন বেন অ্যাফ্লেক।

 

৩. ফরেস্ট পাম্প

বুদ্ধিশুদ্ধি কমে গেছে এমনটা কম-বেশি আমরা সবাই মাঝে মাঝে অনুভব করি। কিন্তু আপনার যদি প্রতিনিয়ত মনে হয় ‘একে তো আমার বুদ্ধিই নেই, তার উপর ভুলভাল সময়ে উল্টোপাল্টা জায়গায় উপস্থিত থেকে বেঠিক সব কাজ করে বসছি’ তাহলে ‘ফরেস্ট গাম্প’ মুভিটি আপনার জন্যই।

১৯৮১ সালের কোনো এক সময়ের ঘটনা, বোকাসোকা ফরেস্ট গাম্প বাস স্টেশনে বসে একের পর এক তার জীবনের সব কাহিনী বলে যেতে থাকে। ঘটনাক্রমে ইউএস আর্মিতে যোগদান করা, এক সহযোদ্ধার জীবন বাঁচানো (যে আদৌ সেই পঙ্গুত্বের জীবন নিয়ে বাঁচতে চায়নি), রাগবী তারকা হয়ে ওঠা, বন্ধুর কথায় চিংড়ি মাছের ব্যবসা শুরু করা, ভালোবাসার মানুষ জেনির সাথে হিপ্পিদের মতো জীবনযাপন করা, ফলের ব্যবসা ভেবে অ্যাপল কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করা, ছোটবেলায় এলভিস প্রিসলিকে নাচ শেখানো, জন এফ কেনেডির সামনে না বুঝেই নিজেকে হাসির পাত্রে পরিণত করা- কী না করেছে সে জীবনে! এক ঝুড়ি অর্জন নিয়েও দিনশেষে ফরেস্ট গাম্প সেই সাধারণ গাম্পই থেকে যায়, যে কিনা ব্যবসা থেকে অর্জিত লাভের অর্ধেক তার মৃত বন্ধুর পরিবারকে পাঠিয়ে দিতে একদম ভুল করে না, বান্ধবী জেনির শত উপেক্ষাও যার ভালোবাসা এক ফোঁটা কমাতে পারে না।

রবার্ট জেমেকিসের পরিচালনায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন হলিউডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। সেরা অভিনেতা সহ সর্বমোট ১৪টি বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে ৬টি বিভাগে অস্কার জেতে ‘ফরেস্ট গাম্প’।

 

৪. ডেড পোয়েটস সোসাইটি

কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল, খুব শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভর্তিযুদ্ধ। আমরা হয়তো জানতেও পারবো না এই যুদ্ধে হারিয়ে যাচ্ছে কত শত স্বপ্নের পাখিরা, গলা টিপে মেরে ফেলা হচ্ছে তাদের। অভিনয় যার নেশা, সেই ছেলেটিকে হয়তো জোর করে ভর্তি করানো হবে কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে, নৃতত্ত্ব ভালোবাসা মেয়েটিকে বাবা-মার পছন্দে পড়তে হবে মেডিকেলে। ২০ বছর পরেও হয়তো এই জোর করে চাপানো সিদ্ধান্ত আপনার বুকের ভেতর থেকে একটা না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস বের করে আনবে। যারা এরকম মনোকষ্টে ভুগছেন, তাদের উৎসর্গ করেই তৈরি করা হয়েছে ‘ডেড পোয়েটস সোসাইটি’ সিনেমাটি।

রক্ষণশীল ভাবধারার অভিজাত বোর্ডিং স্কুল ওয়েলটন একাডেমি। গতানুগতিক পড়াশোনার সেই নিয়মকে ভেঙে ছাত্রদের মধ্যে ঘাসফড়িং চেনার, কবিতা পড়ার, ভিন্নদৃষ্টিতে জগতকে দেখার চেতনার জন্ম দিতে আসে তরুণ শিক্ষক জন কিটিং। প্রথাবিরোধী এই শিক্ষক একদল প্রাণোচ্ছ্বল কিশোরকে দু’চোখ মেলে স্বপ্ন দেখতে শেখায়, বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলে অনুভূতি দিয়ে সবকিছুকে বুঝতে শেখায়, ছাত্ররা তাকে ডাকে ‘Oh captain, my captain’ বলে। “Seize the day, boys. Make your lives extraordinary”– এই বাণী নিয়ে আসা সেই শিক্ষককেও এক সময় নিয়মের বেড়াজালে বন্দী হয়ে চলে যেতে হয় স্কুল ছেড়ে। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখা নীল পেরি জীবন নামের নাটক থেকেই চিরতরে বিদায় নিতে বাধ্য হয়। তবুও সেই মৃত্যুর দৃশ্য নিজ চোখে দেখার পর টোড অ্যান্ডারসনের “It’s beautiful” বলে বমি করে ফেলা যেন এই পুরো সিস্টেমের বিরুদ্ধে তার ঘৃণাকেই প্রকাশ করে। হতাশা নয়, মাঝরাতে গুহার ভেতরে মৃত কবিদের যে সংঘ বসেছিল, তার স্বাদ আস্বাদন করতে হলেও একবার দেখে ফেলতে হবে সিনেমাটি।

পরিচালক পিটার ওয়েরের নির্দেশনায় জন কিটিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবিন উইলিয়ামস। রবিনের আত্মহত্যার পর যে কয়টি চলচ্চিত্রের জন্য সিনেমাজগত তার কাছে চিরঋণী হয়ে আছে, তার মধ্যে ‘ডেড পোয়েটস সোসাইটি’ অন্যতম।

 

৫. মেশিনগান ফ্রিচার

খুব বেশি মাস্তানি হয়ে যাচ্ছে, এবার একটু ভালো কাজে মন দেয়া দরকার- এই ব্যাপারে যদি আপনি মোটিভেশন পেতে চান, তাহলে আজই দেখে ফেলুন ‘মেশিন গান প্রিচার’ সিনেমাটি। নাম শুনে মারদাঙ্গা কোনো সস্তা হলিউডি মুভি ভেবে বসবেন না এটাকে, আপনার ভাবনার জগতকে উল্টে দেয়ার ক্ষমতা রাখে এই সিনেমাটি ।

স্যাম চিল্ডার্সের জীবনী অবলম্বনে সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে ‘মেশিন গান প্রিচার’ মুভিটি। স্যাম ছিলেন কুখ্যাত এক মাদক ব্যবসায়ী, গ্যাং বাইকার। জেল ফেরত এই দুর্ধর্ষ গুণ্ডার হাতে দুর্ঘটনাক্রমে প্রায় মরতে বসেছিল এক ভবঘুরে। ভীষণভাবে তাকে নাড়া দিয়ে যায় এই ঘটনাটি, পরদিনই স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঈশ্বরের হাতে নিজেকে সঁপে দেন স্যাম। নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে সৎ পথে জীবনযাপন শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে উগান্ডায় শরণার্থীদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে এক গ্রাম শিশুকে উদ্ধার করে আনেন স্যাম। অনাথ এই শিশুদের জন্য ধীরে ধীরে হাজারো প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তোলেন তিনি। এভাবেই এগিয়ে চলে সিনেমার কাহিনী যার প্রতিটি দৃশ্যই গভীর দাগ কেটে যায় দর্শকের মনে।

মার্ক ফরস্টারের পরিচালনায় রবি ব্রেনারের অনবদ্য অভিনয়ে চোখের পানি ধরে রাখা কষ্টের। ভালো কিছু করার একটা তীব্র আকুতি নিয়েই সিনেমাটি শেষ করতে পারবেন আপনি।

প্রায় প্রতিটি উদ্যোক্তারই ভালো-খারাপ দুই ধরণের সময়ের মধ্যে দিয়েই জেতেহয়। আমরা খারাপ সময় মূলত মোটিভেশনের জন্য অনেক কিছুই করি। এর মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোক্তার জীবনী পড়ি অথবা বিভিন্ন মুভি দেখি। প্রেরণা দুই ধরণের হতে পারে। একটি পজেটিভ, আরেকটি নেগেটিভ। পজেটিভ মোটিভেশন আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর নেগেটিভ মোটিভেশন আপনাকে টানবে পিছনের দিকে। আর যারা উদ্যোক্তা হতে চান বা আছেন, তাদের জন্য পজেটিভ প্রেরণামূলক কিছু মুভি আছে, যেগুলো তাদেরকে খারাপ সময়গুলোতে সাহস যোগায় এবং সেই সময়গুলোকে মোকাবেলা করতে শেখায়। তাই, এখানে আরও কিছু মুভির নাম দিলাম, যেগুলো আমার ভালো লেগেছে। আপনারাও চাইলে দেখতে পারেন।

  • Startup.com
  • Catch Me If You Can
  • Joy
  • Twelve Angry Men
  • Wall Street
  • Office Space
  • The Rainmaker
  • Thank You For Smoking
  • The Commitments
  • The Social Network

Share this Post on