Web
Analytics
ই- কমার্স এবং প্রোডাক্ট প্রফেশনাল ফটোশুট ! - Uddoktagiri Blog
কেওড়া রেস্তোরাঁ
চাকরির বদলে রেস্তোরাঁ ব্যবসা।
March 27, 2018
Business Ideas
Starting A Business Doesn’t Have To Be Scary
March 31, 2018

ই- কমার্স এবং প্রোডাক্ট প্রফেশনাল ফটোশুট !

Share this Post on

আচ্ছা, আমরা প্রোডাক্টের প্রফেশনাল ফটোশুট করতে এতো অবহেলা কিংবা পেশাদারিত্বের অভাব কেন দেখাই? আমি এখন পর্যন্ত আমার বিজনেস’র জন্য অনেক কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করেছি। কারোর নিজস্ব প্রোডাক্ট ফটোশুট নেই, দুএকটা ছাড়া! অন্যদের ছবি ব্যবহার বা মোবাইল দিয়ে প্রডাক্ট ছবি তুলে তারা কাজ করছেন। মোবাইল দিয়ে প্রডাক্টের ছবি তুলে আপনি ই-কমার্স করতে চান, তাহলে আপনি অর্ধেকের বেশি কাস্টমার হারাবেন আমি মনে করি।

আপনার পেইজ কিংবা ওয়েবসাইট থেকে কাস্টমার ফিজিক্যালি উপস্থিত হয়ে প্রডাক্ট দেখার সুযোগ পাচ্ছে না। কোয়ালিটি দেখতে পারছে না। যাচাই করার সুযোগ নেই। তাহলে আপনাকে কি করতে হবে? কাস্টমারদের জন্য আপনার প্রডাক্ট এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে তারা ছবি দেখেই প্রোডাক্টের প্রতি প্রথমে আকর্ষিত হয়। ছবি দেখেই যেন তারা কোয়ালিটি বিবেচনা করতে পারে। যাচাই বাচাই করতে পারে। এমনভাবেই আপনাকে প্রোডাক্ট হাজির করতে হবে।

শুধু প্রোডাক্টের ফটোশুট দিয়েই আপলোড দিয়ে দিবেন না। সাথে কিছু কাজ করতে হবে। ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করা, যাতে প্রডাক্ট ছবিতে দেখতে আরো বেশি ভালো দেখায়। সহজেই কাস্টমারদের নজরে আনা যায়। পাশাপাশি কিছু তথ্য ছবিতে এড করতে পারেন। যেমন: প্রোডাক্ট কোড, দাম, মোবাইল নম্বর, লোগো। আমার কাছে মনে হয় মোবাইল নম্বর ক্যাপশনে দিলেই ভালো হয়। তবে বেশি তথ্য যোগ করবেন না, এতে প্রোডাক্টের প্রতি ফোকাস কমে যাবে।

দেখেন, আপনার প্রোডাক্ট কোয়ালিটি অনেক উন্নত। দেশ সেরা। কিন্তু যদি আপনি প্রফেশনাল ফটোশুট এবং ডিজাইন কাঁটাছেড়া না করেন ই-কমার্সে হাজির হন, তাহলে আপনার প্রোডাক্ট কোয়ালিটি কাস্টমার বুঝতে পারবে না। লোকাল কিছু প্রোডাক্ট, যেগুলা মানসম্মত না কাস্টমার সেভাবেই বিবেচনা করবে। এবং আপনার প্রতিষ্ঠান ভুয়া ভাবতেও শুরু করবে কাস্টমার, যখন বাজে রেজুলেশনের কিংবা অন্য কোথাও থেকে ছবি সংগ্রহ করে আপলোড দিবেন।

এছাড়া আপনার ডিজাইনে কাঁটাছেড়া করার সময় কোনো ভাবেই প্রোডাক্টের কালার পরিবর্তন করা যাবে না, অনেকে ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করতে গিয়ে প্রোডাক্টেরও কালার পরিবর্তন করে ফেলেন। এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য মস্ত বড় ভুল। এই ভুলের মাশুল আপনি টের পাবেন যখন কাস্টমার ছবিতে যেরকম দেখে অর্ডার দিয়েছে, কিন্তু ডেলিভারি দেয়ার পর হাতে পেয়ে সেইম কালারের প্রোডাক্ট না পাবে। আপনার প্রতিষ্ঠান নিয়ে তারা খারাপ রিভিউ করবে। বর্তমান পরিস্থিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য খারাপ রিভিউ কতটা বিজনেসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে সবারই জানার কথা। যদি কোনোভাবে ভাইরাল হয়ে যায়, তাহলে খুব মারপ্যাঁচ সিচুয়েশনে পড়তে হবে।

আর কত অন্যের পেইজ, ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্ট ছবি চুরি করে ব্যবহার করবেন। কাস্টমারদের বিভ্রান্তি তে ফেলে দিবেন? অন্য প্রোডাক্টের ছবি ব্যবহার করে ডেলিভারি করবেন আরেকটা প্রোডাক্ট। আমার কাছে মনে হয় এই সুযোগ কিছু ভুয়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো নিচ্ছে। তাদের জন্য যারা ই- কমার্সে প্রফেশনালি কাজ করতে চায়, তাদের জন্য ভালো জায়গা তৈরি হচ্ছে না।

আপনি আলিবাবা তে দেখেন, তারা কিভাবে প্রোডাক্ট উপস্থাপন করে। প্রোডাক্টের এপিঠ ওপিঠ, ভেতরের ছবি তারা তুলে দেয়। জুম করা যায়। পাশাপাশি অনেক বড় সেলারদের প্রোডাক্ট ভিডিও আছে। এইজন্যই তো তারা ভালো করছে। এইরকম দেশ এবং দেশের বাইরে ই-কমার্সকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে সবার একই অবস্থা। তারা প্রোডাক্ট ফটোশুটের ব্যাপারে যত্নশীল।

প্রোডাক্ট ফটোশুট করতে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে তাও না। আপনি চাইলে শুরুতে আপনার পরিচিতদের থেকে কাজটা করিয়ে নিতে পারেন। আপনার পরিচিত যারা ভালো ছবি তুলে, ভালো মানের ক্যামেরা আছে তাদের দিয়ে করিয়ে নিতে পারেন। মডেলও পরিচিতদের বা আত্নীয়দের মধ্য থেকে নিলেন। এছাড়া মডেল প্রাথমিক দিকে না ব্যবহার করলেও ভালো হয়। আপনি ম্যানিকুইন কিংবা হ্যাংকার ইউজ করে প্রোডাক্ট ফটোশুট করাতে পারেন। এটার মাধ্যমে ভালো ভাবেই প্রোডাক্ট আকর্ষণ করা যায়। আস্তে আস্তে আপনার বিজনেস পরিধি বাড়ার সাথে সাথে আরো নাহয় প্রোডাক্ট ফটোশুটের জন্য ইনভেস্ট বাড়ালেন।

আপনি যদি ইকমার্সে কাজ করতে চান, ভালো করার স্বপ্ন দেখেন আমি বলবো-  আপনি প্রোডাক্ট ফটোশুটের ব্যাপারে বেশি নজর দিন। সবার থেকে আলাদা ভাবে চিন্তা করুন। যত্নশীল হোন। কোথাও আপনার ফটোশুট দেখেই যেন কাস্টমাররা বলতে পারে, এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট। সেভাবে কাজ করুন। মোবাইলে তোলা প্রোডাক্ট ছবি আপলোড দিয়ে অর্ডার সংখ্যা এবং প্রফেশনাল প্রোডাক্ট ফটোশুট করে আপলোড দিয়ে অর্ডার সংখ্যা কেমন পরিবর্তিত হয় যাচাই করুন। কাস্টমার বাড়বেই। ভালো রিভিউ পাবেন, যেটা আপনার বিজনেসের সুনাম। যেটা এক প্রকার পুঁজিও!

লেখক, মাসুদ আনসারী।
ফিচার রিপোর্টার, ফাউন্ডারঃ
 shopgraam.com 

Share this Post on