Web
Analytics
কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক একাউন্ট সহ অনন্য জরুরী কাগজপত্র করবেন। - Uddoktagiri Blog
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়।
July 31, 2018
ব্যবসা শুরুর আগে
কিভাবে একটি স্টার্টআপ শুরু করতে হয় ?
August 4, 2018

কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক একাউন্ট সহ অনন্য জরুরী কাগজপত্র করবেন।

Share this Post on

সিটি কর্পোরেশন কর বিধান- ১৯৮৩ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ট্রেড লাইসেন্সের সূচনা ঘটে। এই লাইসেন্স উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। সিটি কর্পোরেশন বা সিটি পরিষদ এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে থাকে। ট্রেড লাইসেন্স বিশেষভাবে শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তির নামে প্রদান করা হয় এবং এটা কোনভাবে হস্তান্তরযোগ্য নয়। এই লাইসেন্স ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারবে না। নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স আঞ্চলিক কর অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদান করে থাকেন। ট্রেড লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফি লাইসেন্স ফরমে উল্লেখিত যে কোন ব্যাংক-এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

তবে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার পূর্বে দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

  • যথাযথ কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থার অবস্থান নির্ধারণ।
  • ব্যবসার প্রকৃতি নিরুপণ।

আপনার ব্যবসার অবস্থান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন করতে হবেঃ

  • ব্যবসার অবস্থান সিটি কর্পোরেশন এলাকা যেমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালে হয় তাহলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন হতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
  • ব্যবসার অবস্থান কোন মিউনিসিপিলিটি (পৌরসভা) এলাকায় হয়ে থাকে তাহলে ঐ এলাকার মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ হতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
  • অন্যান্য ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ যেমন- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স পেতে হলে নিম্নলিখিত ধাপসমূহ অনুসরণ করতে হবেঃ

  • নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
  • প্রতিষ্ঠান/কারখানা/কোম্পানী লিমিটেড হলে মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যালস আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশের বিবরণ সহ নকশা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • প্রতিষ্ঠান/কারখানা/কোম্পনীর পার্শ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
  • কারখানা/সি.এন.জি স্টেশন/দাহ্য পদার্থের ব্যবসার ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদপ্তর/ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র/ অনুমতিপত্র আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • আবেদনকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • প্রতিষ্ঠান প্রেস/পত্রিকা হলে ডিক্লারেশন পত্র আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর স্থান ব্যক্তিগত হলে সিটি কর্পোরেশনের হালনাগাদ ট্যাক্সের রশিদ এবং ভাড়ায় হলে ভাড়ার চুক্তিপত্র/রশিদ আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।

কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়?

সিটি করর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে ।

নিম্নে বিভিন্ন প্রকার ব্যবসার জন্য কি কি ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে তার একটি তালিকা দেয়া হলো:

সাধারণ ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে:

  • দোকান ভাড়ার চুক্তি পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্সপরিশোদের এর ফটোকপি ।
  • আবেদনকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ।
  • ব্যবসা যদি যৌথভাবে পরিচালিত হয় তাহলে ১৫০/৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে পার্টনার শিপের অঙ্গীকারনামা/শর্তাবলী জমা দিতে হবে ।

ফ্যাক্টরির/কারখানা ট্রেড লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে:

  • পরিবেশের ছাড়পত্রের কপি ।
  • প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/কারখানার পাশ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার বিবরণসহ নকশা/লোকেশন ম্যাপ।
  • প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/কারখানার পাশ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা ।
  • ফায়ার সার্ভিস এর ছাড়পত্র ।
  • ঢাকাসিটিকর্পোরেশন এর নিয়ম – কানুন মেনে চলার অঙ্গিকারনামা ১৫০/৩০০ টাকারজুডিশিয়ার স্ট্যাম্প এ স্বাক্ষরিত।

এছাড়াও আরো যেসব ডকুমেন্ট লাগবে সেটা হল:

  • সি.এন.জি ষ্টেশন/দাহ্য পদার্থ ব্যবসার ক্ষেত্রে:  বিস্ফোরক অধিদপ্তর/ ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র/অনুমতিপত্র।
  • ক্লিনিক/প্রাইভেটহাসপাতালের ক্ষেত্রে:  ডিরেক্টর জেনারেল – স্বাস্থ্য, কর্তৃক অনুমতিপত্র।
  • লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে: কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল এবং সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন।
  • প্রিন্টিং প্রেস এবং আবাসিক হোটেল এর ক্ষেত্রে: ডেপুটি কমিশনার, কর্তৃক অনুমতিপত্র।
  • রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে: মানবসম্পদ রপ্তানী বুর‍্যো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স।
  • অস্ত্র ও গোলাবারুদ এর ক্ষেত্রে: অস্ত্রের লাইসেন্স।
  • ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে:  ড্রাগ লাইসেন্স এর কপি।
  • ট্রাভেলিং এজেন্সির ক্ষেত্রে: সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি।

ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসা:

১) ট্রেড লাইসেন্স করতে কতো টাকা লাগে?

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় এর স্থানীয় সরকার বিভাগ, পৌর – ১ শাখা হতে বিশেষ প্রজ্ঞাপন এর মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স এর ফি নির্ধারন করা হয় । ব্যবসার ধরন এর উপর ভিত্তি করে ট্রেড লাইসেন্স এর ফি নির্ধারন করা হয়ে থাকে । স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে।

২) কারা ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবেন?

নারী, পুরুষ উভয়ই ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে তবে অবশ্যই তাকে কোন না কোন ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে হবে । বয়স ১৮ বছর এর উপরে হতে হবে ।

৩) একটি ট্রেড লাইসেন্স কি একাধিক ব্যবসায় ব্যবহার করা যায়?

না একটি ট্রেড লাইসেন্স শুধু মাত্র একটি ব্যবসার জন্যই প্রযোজ্য অর্থাৎ যে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্সটি করা হয় শুধু মাত্র সেই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা যাবে অন্য কোন ধরনের ব্যবসার জন্য ব্যবহার করা যাবে না ।নতুন কোন ব্যবসা শুরু করলে তার জন্য নতুন ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে ।

৪) একটি ট্রেড লাইসেন্স কি একাধিক ব্যাক্তি ব্যবহার করতে পারবেন?

না একটি ট্রেড লাইসেন্স শুধু মাত্র একজন ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তা ব্যবহার করতে পারবেন অর্থাৎ যে ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তার নামে ট্রেড লাইসেন্সটি করা হয়েছে এটি শুধু মাত্র তার জন্যই প্রযোজ্য । এটা কোনভাবেই হস্তান্তর যোগ্য নয় ।

৫) ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে এবং কোথা থেকে নবায়ন করতে হয়?

যে অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়, সেখান থেকেই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা হয় । ট্রেড লাইসেন্স সাধারনত ১ বছর এর জন্য ইস্যু করা হয় । প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয় । পুরানো ট্রেড লাইসেন্স দেখিয়ে নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স
নবায়ন করতে হয় ।

সকল ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার পর কর্পোরেশনের এর ইন্সপেক্টর প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত করার পর নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি আদায় করে ট্রেড লাইসেন্স দিবেন।

** ট্রেড লাইসেন্স প্রতিবছর নবায়ন করতে হবে।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে হবেঃ জোনাল অফিস

ওয়েবঃ

www.dncc.gov.bd

www.dhakasouthcity.gov.bd

 

ব্যাংক একাউন্ট-

আমরা ব্যাংকে লেনদেন করার জন্য ব্যক্তি নামে যে একাউন্ট খুলি তাকে ব্যাক্তিগত একাউন্ট বলা হয়। এই হিসাব মূলত সঞ্চয়ী হিসাব বা সেভিংস একাউন্ট। এই হিসাবে ব্যবসায়িক লেদদেন অনুমোদন করেনা। যদিও আপনার ব্যবসায়ের টাকা আ্পনি আপনার একাউন্টে রাখলে কোনো সমস্যা নেই। আবার এই হিসেবের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। দৈনিক কতোবার টাকা লেনদেন করা যাবে তারা লিমিটেশন রয়েছে। আবার বেশী টাকা জমা হয়ে গেলেও সমস্যা হতে পারে। এসব বিবেচনায় ব্যবসায়িক হিসাব বা কারেন্ট একাউন্ট বা সিডি একাউন্ট খোলা হয়।

 

ব্যবসায়ী একাউন্ট খুলতে যা লাগে-

 

  • ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • নমিনির ১কপি ছবি, নমিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ভোটার আইডি কার্ডের কপি।
  • আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর কপি, তবে কোন কোন ব্যাংক মূল আইডিটা দেখতে চায়।
  • ট্রেড লাইসেন্স মূল কপি ও ফটোকপি। মূল কপি দেখে ফেরত দেবে।
  • বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র। অর্থাৎ যে বাড়িতে আপনি ব্যবসা করেন। সে বাড়িওয়ালার সাথে প্রতিষ্ঠানের
    নামে সম্পাদিত চুক্তিপত্র।
  • ১২ ডিজিটযুক্ত টিআইএন সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।

You may also like

একজন উদ্যোক্তার কি কি গুনাবলী থাকা উচিৎ?

Share this Post on